এনকাউন্টার কিলিং। আরও বুঝিয়ে বললে বিচার বহির্ভূত হত্যা। অর্থাৎ কোনও পুলিশ অফিসার বা সশস্ত্র পুলিশ কর্মী যখন আত্মরক্ষার তাগিদে কোনও গ্যাংস্টার বা দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এবং গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার কাকভোরে হায়দরাবাদের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তদের এনকাউন্টারে মৃত্যুর পর এই নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে। তবে এই প্রথম এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটল না। এর আগেও দেশজুড়ে এমন একাধিক এনকাউন্টার হয়েছে। তারই কয়েকটি উল্লেখ করা হল।
প্রথম এনকাউন্টার হয়েছিল ১৯৮২ সালের ১১ জানুয়ারি। মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন ছিলেন মান্য সুরভে। মুম্বইয়ের ওয়াডলা অঞ্চলে তাঁকে এনকাউন্টার করেন পুলিশ অফিসার রাজা তাম্বাত এবং ইসাক বাগবান।
এর পর থেকে মুম্বইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। ২০০৩ সাল পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে মোট ১২০০ দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়।
২০০৮ সাল। ওয়ারাঙ্গলের এসপি তখন ভিসি সজ্জনার। এক তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলা এবং খুনের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় তিন জনকেই। সেখানেই তাদের এনকাউন্টার করা হয়। পুলিশ দাবি করেছিল, তিন অভিযুক্তই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাই এনকাউন্টার।
এই ঘটনার সাত বছর পর ২০১৫ সালে ফের এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটে হায়দরাবাদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে নালগোন্ডা-ওয়ারাঙ্গল জেলার সীমান্তে।
২০১৫ সালে ৭ এপ্রিল সিমির পাঁচ সদস্যকে হায়দরাবাদ কোর্টে শুনানির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল তেলঙ্গানা পুলিশ। তখনই পালানোর উদ্দেশে পুলিশের উপরই হামলা করেন তাঁরা। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। পাঁচজনই মারা যান।
তার আগে ২০০৪ সালে একটি এনকাউন্টারের ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ইশরাত জাহান এবং তাঁর সঙ্গীদের এনকাউন্টারের ঘটনা।
ইশরাত ও তাঁর তিন সঙ্গীকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে গুজরাত পুলিশ গুলি করে মারে তাঁদের। তাঁরা নাকি সে সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের ছক কষেছিলেন।
এর পরের বছর ২০০৫-এর নভেম্বরে গুজরাত পুলিশের এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিলেন সোহরাবুদ্দিন শেখ।
গুজরাত পুলিশের দাবি ছিল, সোহরাবুদ্দিনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার যোগাযোগ ছিল এবং সে লিপ্ত ছিল গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার করার একটি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে।
গ্যাংস্টার ছোটা রাজনের ছায়াসঙ্গী ছিল রামনারায়ণ গুপ্ত ওরফে লাখান ভাইয়া। ২০০৬ সালের ১১ নভেম্বর মুম্বইয়ের ভরসোভার কাছে পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় লাখানের।
২০১০ সালে ১ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় মাওবাদী নেতা চেরাকুরি রাজকুমারের। মহারাষ্ট্র সীমান্তে জোগাপুর জঙ্গলে তল্লাশি অভিযানের সময়ই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর।
২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে লখনউয়ের মুকাদামপুর থানার কাছে বিবেক তিওয়ারি নামে এক অ্যাপল সংস্থার কর্মীকে প্রকাশ্য রাস্তাতেই এনকাউন্টার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, পুলিশ গাড়ি দাঁড় করাতে বললে তিনি তা করেননি। তার পরই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।
২০১৯ সালে হায়দরাবাদে সাইবরাবাদ পুলিশের এনকাউন্টার। এক ধর্ষিতা চিকিৎসকের চার অভিযুক্তকে এনকাউন্টার করে সাইবরাবাদ পুলিশ।