বাড়ির কাজে ব্যস্ত হাথরসের সেই নির্যাতিতার মা। বুধবার। ছবি: এএফপি
রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দেওয়া বোনের মুখটা শেষ বারের মতো দেখতে পাননি ভাল করে। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে ঘন ঘন পুলিশের মুখ দেখতে পাচ্ছেন ওঁরা।
ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকছেন সবাই। কখন আবার পুলিশ এসে কাকে জোর করে তুলে নিয়ে চলে যায়, সেই আতঙ্কে মোবাইল ফোনে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছেন। ফিসফিস করে জানাচ্ছেন, বাবা আর দুই পরিজনকে বুধবার দুপুরে ফের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ পিডব্লিউডি ভবনে নিয়ে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের হাথরসের নির্যাতিতার ভাইয়ের অভিযোগ, ‘‘আমরা যাতে মুখ না খুলি, সেই জন্যই আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে যাতে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরে আসি, বোনের মৃত্যুর বিচার না চাই। কিন্তু আমরা এখনও লড়াই করে চলেছি।’’
এত দিন পর্যন্ত দুই ভাই, তিন বোন ছিলেন ওঁরা। গত পরশু দুপুর থেকে এক বোন ‘নেই’। তবে ১৯ বছরের ছটফটে, প্রাণবন্ত মেয়েটিকে শেষ বার চোখের দেখাও দেখতে পাবেন না, ভাবেননি কেউই। নির্যাতিতার ভাই জানাচ্ছেন সেটাই— যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও শিরোনাম হয়ে গিয়েছে। তাঁর বোনের দেহ দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল থেকে হাথরসের গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত আনতে দেওয়া হয়নি। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও গোটা পরিবারকে কার্যত ঘরে আটকে রেখে দলিত, ধর্ষিত মেয়েটির দাহকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক-টুইটারে দিনভর চর্চায় হাথরস-বাবরি
বুধবার সকাল থেকে বেশ কয়েক বার ফোন করার পরে বিকেলের দিকে কথা বলতে রাজি হন ভাই।। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক নেতারা কেউ এসেছেন? উত্তর, ‘‘কেউ আমাদের পাশে নেই। সবাই দোষীদের আড়াল করছে। আমাদের কী হবে, জানি না। যাতে কোনও কথা না বলি, সেই চাপ দেওয়া চলছে সমানে।’’ জানাচ্ছেন, দলিত নেতা তথা ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের দলের ছেলেরা দিল্লি থেকে হাথরসে এসেছিলেন আগের রাতেই। এই সময়ে তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদেরও মাঝ রাস্তায় আটকে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাথরসে গণধর্ষিতা দলিত তরুণীর দেহ না-দিয়ে পুড়িয়ে দিল যোগীর পুলিশ