সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
দেশের প্রথম সারির নিউজ় চ্যানেলগুলি দৃঢ় ভাবে ঘৃণা-ভাষণের বিরুদ্ধে সরব হয় না বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মতে, নিউজ় চ্যানেলগুলিতে ঘৃণা-ভাষণকে জায়গাও দেওয়া হয়ে থাকে। একই সঙ্গে, সুপ্রিম কোর্ট আজ মনে করিয়েছে, চ্যানেলে যখন ঘৃণা-ভাষণ দেওয়া হয়ে থাকে, তখন এক জন অ্যাঙ্কারের ভূমিকাও ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, এ নিয়ে কেন্দ্র ‘নীরব দর্শক’ কেন?
কেন অ্যাঙ্করের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ আজ তা-ও বিস্তারিত ভাবে বলেছে বিচারপতি এম কে জোসেফ এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চ। আদালতের বক্তব্য, ‘‘মূলধারার খবরের চ্যানেলগুলি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ যখন বক্তব্য রাখে তখন তা নিয়ন্ত্রণহীন। সমাজের উপর প্রথম সারির খবরের চ্যানেলগুলির প্রভাব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অ্যাঙ্করদের দেখতে হবে, চ্যানেলে ঘৃণা-ভাষণ যেন না দেওয়া হয়। কেউ যদি ঘৃণা-ভাষণ দিতে থাকেন, তা হলে তাঁকে থামিয়ে দেওয়াও এক জন অ্যাঙ্করের কাজ।’’ বিচারপতি জোসেফের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ… এখানে আমেরিকার মতো স্বাধীনতা নেই। কিন্তু কোথাও তো একটা রেখা টানতে হবে।’’
শীর্ষ আদালত মনে করে, ঘৃণা-ভাষণ দিয়ে রাজনৈতিক নেতারা ফায়দা লোটেন। আর টেলিভিশন চ্যানেলগুলি তাঁদের ওই ভাষণ দেওয়ার জন্য মঞ্চ তৈরি করে দেয়।
ব্রিটেন কোনও চ্যানেলে ঘৃণা-ভাষণে যে সাজা হয় তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি জোসেফ। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রিটেনে এক বার একটি চ্যানেলকে এ জন্য মোটা অঙ্কে জরিমানা করা হয়েছিল। আমাদের এখানে সে সব হয় না। কড়া হাতে মোকাবিলা করা দরকার। ওই রকম ঘটনা ঘটলে জরিমানা করা, সম্প্রচার বন্ধ করা দরকার।’’ বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের মতে, যত ক্ষণ না ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তত ক্ষণ ঘৃণা-ভাষণ চলতেই থাকবে। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি জোসেফের প্রশ্ন, ‘‘সরকার কেন এ নিয়ে নীবর দর্শক হয়ে রয়েছে? দেশ কোন দিকে যাচ্ছে? কেন্দ্র কেন একে তুচ্ছ বিষয় হিসেবে দেখছে?’’
শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। ঘৃণা-ভাষণ আটকাতে আইন কমিশনের সুপারিশগুলি সরকার কার্যকর করতে চায় কিনা, কেন্দ্রের কাছে তা-ও জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।