Migrant Labour Died

গো-রক্ষকদের পাশে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী

ঘটনার জেরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। তৃণমূলের নেতারা প্রতিবাদে মুখর তো হলেনই, নিজের এক্স হ্যান্ডলে দীর্ঘ পোস্ট করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৫
Share:

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিংহ সাইনি। —ফাইল ছবি।

গোমাংস ভক্ষণের ‘অপরাধে’ বাংলার শ্রমিককে হরিয়ানার গো-রক্ষকবাহিনী পিটিয়ে খুন করে। আর ওই ঘটনা নিয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিংহ সাইনির প্রতিক্রিয়া, ‘‘গো-পূজক গ্রামবাসীদের এই কাজ থেকে কে-ই বা নিবৃত্ত করতে পারে?’’

Advertisement

ঘটনার জেরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। তৃণমূলের নেতারা প্রতিবাদে মুখর তো হলেনই, নিজের এক্স হ্যান্ডলে দীর্ঘ পোস্ট করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। হরিয়ানার এই ঘটনার পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের নাসিকেও গোমাংস রাখার সন্দেহে এক বৃদ্ধকে ট্রেনে নিগ্রহ করেছে জনতা। রাহুল সুর চড়িয়েছেন সেই ঘটনার বিরুদ্ধেও। সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট, ভোটের মুখে দাঁড়ানো হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে বিজেপি-কে কোণঠাসা করতে বিষয়টিকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করবে কংগ্রেস এবং বিরোধীরা। অন্যদিকে বাংলায় যখন আর জি কর কাণ্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি, তখন ভিন্ রাজ্যে বাংলার শ্রমিক নিগ্রহের বিষয়টি নিয়ে মুখর হতে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে।

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলার শাসকদলের সাংসদ-নেতারা। তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘হরিয়ানার চরখি দাদরি জেলায় বাংলা থেকে যাওয়া সাবির মল্লিক নামক এক ব্যক্তিকে গোরক্ষা বাহিনী পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ। পুলিশের বক্তব্য, গোমাংস ভক্ষণের অভিযোগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গরুকে পূজা করা হয়, তার রক্ষকদের কে বাধা দেবে! এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কি মারাত্মক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করা বিজেপি সরকার অপরাধকে মদত দিচ্ছে এবং আড়ালও করছে।’’

Advertisement

দলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘গত দু'দিনে হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে দু’জন মুসলিমকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। হরিয়ানার সন্ত্রাসবাদীরা দাবি করেছে, বাংলা থেকে যাওয়া মুসলিম যুবক সাবির মল্লিক গোমাংস খাচ্ছিলেন। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হল, হরিয়ানার নির্লজ্জ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, 'আমরা কী করব!' যদি মুখ্যমন্ত্রী এবং হরিয়ানা সরকার, গোরক্ষক সন্ত্রাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তা হলে এটা স্পষ্ট যে বিজেপি-র সায় এবং মদতেই এই পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলি ঘটছে’। তিনি জানিয়েছেন, সাবির মালিকের হত্যার বিষয়টি নিয়ে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে লিখেছেন। প্রচ্ছন্ন ভাবে অপরাধের পাশে দাঁড়ানোর অভিযোগ তুলে তাঁকেও নোটিস পাঠানোর দাবি তুলেছেন সাতেক।

হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল। তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘যারা ঘৃণাকে রাজনৈতিক অস্ত্র করে ক্ষমতার সিঁড়িতে চড়েছেন, তাঁরা ক্রমাগত গোটা দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরিও করছেন। খোলাখুলি ভাবে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। আইনকে চ্যালেঞ্জ ছঁড়ে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। বিজেপি সরকারের কাছ থেকে এই অপরাধীরা আশকারা পাচ্ছে। আর তাই তাদের এত সাহস বেড়েছে।’’ অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলে রাহুল লিখেছেন, ‘সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলিমদের উপর ক্রমাগত আঘাত আসছে আর সরকারের শাসনযন্ত্র মুখ বুজে তা দেখে চলেছে’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement