‘সানডে সংবাদ’-এ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
আগামী বছরের প্রথম দিকেই হাতে চলে আসতে পারে করোনার টিকা। রবিবার একটি অনলাইন কথোপকথনে এমনই আশা প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। মানবশরীরে ওই টিকার পরীক্ষার জন্য তিনি নিজেও স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে যোগদান করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
‘সানডে সংবাদ’, এই নামেই ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ওই ভার্চুয়াল কথোপকথন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আগামী বছর প্রথম তিন মাসের মধ্যেই করোনার টিকা আমাদের হাতে চলে আসতে পারে।’’ এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘ভারতে একাধিক করোনা-টিকার পরীক্ষা চলছে। কোনটা যে কার্যকর হয়ে উঠবে তা এখনই আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ২০২১ সালের প্রথম ৩ মাসের মধ্যে আমরা নিশ্চিত ভাবেই ফলাফল জানতে পারব।’’
মানব শরীরে টিকার পরীক্ষা চালানোর সময় যে সম্পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘নিরাপদ টিকা, খরচ, সরবরাহ শৃঙ্খল, উৎপাদন ইত্যাদির মতো বিষয়গুলি নিয়ে গভীর ভাবে আলোচনা চলছে।’’ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘‘টিকা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে। ওই দলটি পুরো প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখছে। যখনই ট্রায়ালের ফল হাতে পাওয়া যাবে তখনই ওই টিকা গণহারে উৎপাদনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে, যাতে সময় নষ্ট না হয়।’’
আরও পড়ুন: সাড়ে ৪৭ লক্ষ ছাড়াল আক্রান্ত, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার সবচেয়ে বেশি
করোনার টিকা তৈরি হয়ে গেলে তা প্রথমে যাঁদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাঁদেরই আগে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি ভাবা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য তিনি নিজেও স্বেচ্ছাসেবক হতে রাজি।
ঘণ্টা খানেকের কথোপকথনে উঠে এসেছে সম্প্রতি করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধের কালোবাজারি হওয়ার অভিযোগও। তার জবাবে তিনি বলেন, ‘‘রেমডেসিভিরের মতো ওষুধের কালোবাজারির অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট সরকারের নজরে এসেছে। এ নিয়ে পদক্ষেপ করার জন্য সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অগার্নাইনাইজেশনকে তাদের রাজ্যভিত্তিক শাখাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: আটকাবে একে ৪৭-এর গুলিও, ভারতে তৈরি ‘ভাবা কবচ’ সুরক্ষা দেবে আধাসেনাকে
কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করা করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’-এর ট্রায়াল ফের শুরু হতে চলেছে ব্রিটেনে। এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, এ দিন দ্রুত করোনার টিকা হাতে পাওয়ার ব্যাপারে আশাপ্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর আগে ব্রিটেনে টিকা-নেওয়া এক স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে অজানা অসুস্থতা দেখা দিয়েছিল। তার জেরে ওই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। ব্রিটেনে ট্রায়াল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রত্যাশিতভাবেই ভারতেও ‘কোভিশিল্ড’-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) স্থগিত হয়ে যায়। ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র অনুমোদন মিললে ফের পরীক্ষা শুরু হবে এদেশে। ভারতে ওই টিকার পরীক্ষা চালাচ্ছে সিরাম ইনস্টিটিউট। ব্রিটেনে ওই টিকার পরীক্ষা চালানোর সবুজ সঙ্কেত মেলার পর, তা নিয়ে আশা জোরদার হয়েছে এ দেশেও।