জ্ঞানবাপী মসজিদ। ফাইল চিত্র ।
জ্ঞানবাপী মসজিদের জমির অধিকার চেয়ে করা হিন্দুপক্ষের মামলার আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা আবেদন করেছিল মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’। ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’-র সেই আবেদন খারিজ করে দিল বারাণসী জেলা আদালত। আদালত ২৭ অক্টোবর এই রায় সংরক্ষণ করেছিল। ২ ডিসেম্বর এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। তার আগে, মসজিদ চত্বরের ভিতরে থাকা ‘শিবলিঙ্গ’ পুজো করার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনের উপর রায় দান স্থগিত করেছিল আদালত।
হিন্দু পক্ষের তরফে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল যাতে মসজিদের জমির অধিকার তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই মামলা বৈধ নয় বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা আবেদন করেছিল মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ কমিটি। অনেক দিন ধরেই সেই মামলার শুনানি চলছিল।
প্রসঙ্গত, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার জলাধারে তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গের’ নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনের শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৭ মে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল, নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে পারে বারাণসীর আদালত। কিন্তু কোনও ভাবেই মসজিদে নমাজ পড়া বন্ধ করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশের আগে বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকরের এজলাসে আদালত নিযুক্ত কোর্ট কমিশনার এবং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত পর্যবেক্ষক দলের সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করা হয়। এর পর বিচারক রবিকুমার দিবাকর মসজিদের অন্দরের ওজুখানা ও তহ্খানা সিল করার নির্দেশ দেন। নির্দেশে বলা হয়, বারাণসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের এক জন কমান্ডান্ট (সুপার) স্তরের আধিকারিককে মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’। তারই প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশ দেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। এর পর মামলাটি বারাণসী নিম্ন আদালত থেকে বারাণসী জেলা আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহ্খানা-সহ) মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী দায়রা আদালতে। এর পর দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার নিযুক্ত কমিটি মসজিদের অন্দরে সমীক্ষা ও ভিডিয়োগ্রাফির নির্দেশ দিয়ে পর্যবেক্ষক দল গঠন করেছিল।