শরজিল। —ফাইল চিত্র।
গুয়াহাটিতে গোষ্ঠী সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগার। সেখানকার প্রায় সাড়ে চারশো রোগীকে বাইরে কোনও হাসপাতালে রাখা সম্ভব নয় বুঝে এ বারে এই কারগারটিকেই কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর। দিল্লির বিতর্কিত ছাত্রনেতা তথা নাগরিত্ব আইন সংশোধনী ও এনআরসি প্রসঙ্গে শাহিনবাগ আন্দোলনের অন্যতম মুখ, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্র শরজিল ইমামও এই কারাগারেই বন্দি রয়েছেন গত ফেব্রুয়ারি থেকে। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তিনিও।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ১৭ জুলাই দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল তাঁকে ফের দিল্লি নিয়ে যেতে গুয়াহাটি পৌঁছায়। পুলিশের ওই দল ও শরজিলের করোনার পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ হয়। রিপোর্ট এলে দেখা গিয়েছে পুলিশের সকলে নেগেটিভ হলেও শরজিলের ফল পজ়িটিভ। ফলে দিল্লি পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সুস্থ না-হওয়া পর্যন্ত শরজিলকে দিল্লি ফেরানো হবে না।
গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এর আগে আক্রান্ত হয়েছেন শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী এনডিএফবি নেতা রঞ্জন দৈমারি, কৃষক নেতা অখিল গগৈ-সহ প্রায় সাড়ে চারশো কয়েদি। সংক্রমণ ছড়িয়েছে রাজ্যের আরও ৬টি জেলেও। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, হাসপাতালে কয়েদিদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে এত জায়গা নেই। কয়েক দিন আগে তেপেসিয়া কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকে কয়েদিরা পালানোর চেষ্টা করলে শূন্যে গুলি ছুড়ে তাদের ফেরাতে হয়েছে। এর মধ্যেও দু’জন চম্পট দিয়েছে। সোনাপুর কোভিড হাসপাতাল থেকেও পালিয়েছে দুই কয়েদি। তাই গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখেই আক্রান্তদের চিকিৎসা চলবে।
প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে এই অভিযোগ জানিয়েছিল, কারাগারগুলিতে করোনা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। উপযুক্ত খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না, রক্ষিত হচ্ছে না বন্দিদের মানবাধিকার। মানবাধিকার কমিশন মুখ্যসচিব এবং আইজি কারাকে ৫ অগস্টের মধ্যে এই সব অভিযোগের জবাব দিতে বলেছে।
অসমে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৯৩ জন। রাজ্যে এখন মোট আক্রান্ত ২৫,০৯২ জন। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৭১.২৩ শতাংশ। মৃতের সংখ্যা ৫৮। মৃত্যু হার ০.২৪ শতাংশ হয়েছে।