দুর্ঘটনায় ভাইকে হারানো সেই যুবক। ছবি: টুইটার।
রবিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের মোরবীর মাচ্ছু নদীতে সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত ওই ঘটনায় প্রায় ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেতু থেকে দর্শনার্থীদের পড়ে যাওয়ার ঘটনা যে কতটা ভয়াবহ এবং মর্মান্তিক ছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ব্রিজ থেকে জলে পড়ে যাওয়ার পরও কোনও ক্রমে রক্ষা পেয়েছেন এক যুবক। কিন্তু মৃত্যু হয়েছে তাঁর সঙ্গেই ঘুরতে যাওয়া তুতো ভাইয়ের।
সংবাদমাধ্যমকে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলার সময় ওই যুবক বলেন, ‘‘যখন আমি জলে পড়ব পড়ব করছি, তখন আমি ভাবছিলাম যে স্বপ্ন দেখছি। জলে পড়ার পর ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। জলে পড়ার আগে জীবন বাঁচাতে সেতু ধরে দু’ঘণ্টা ঝুলেছিলাম। জলে পড়ার পর আমার সামনে অনেক বাচ্চাকে ডুবে যেতে দেখলাম। কিন্তু আমি সাঁতার না জানায় কাউকে বাঁচাতে পারিনি।’’
ভয়াবহতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘‘আমি সেতুর একেবারে মাঝখানে ছিলাম। সেতুটি মাঝখান থেকেই ভেঙে পড়ে এবং আমরা সবাই সোজা নীচে পড়ে যাই। সেতুতে মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।’’
তিনি বেঁচে গেলেও সেতু থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের তুতোভাইয়ের। সে কথা বলতে গিয়ে গলা কেঁপে ওঠে ওই যুবকের। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন জলে পড়ে যাই তখন আমি ভাইকে দেখতে পাইনি। আমি যেখানে পড়েছিলাম, তার থেকে ও বেশ খানিকটা দূরে পড়েছিল। ওকে বাঁচাতে পারিনি। আমার ভাইয়ের দেহ ইতিমধ্যেই ক্রেনের সাহায্যে জল থেকে টেনে বার করা হয়েছে।’’
যুবকের প্রশ্ন, ‘‘যদি পুর প্রশাসনের তরফে সেতুটি খোলার অনুমতি না দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে কেন সেতুটি খোলা হয়েছিল?’’
প্রসঙ্গত, মাচ্ছু নদীর উপরে সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। রবিবার সন্ধ্যায় প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১। উদ্ধার করা হয়েছে ১৭৭ জনকে।
সরকারে তরফে ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারকে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কেন ভেঙে পড়ল ব্রিজ? তার তদন্ত করতে সরকারের তরফে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।