মাচ্ছু নদীর উপর ভেঙে পড়া সেতু। ফাইল চিত্র ।
গুজরাতের মোরবী শহরে মাচ্ছু নদীর উপরের সেতু বিপর্যয়ের ঘটনার ভয়াবহতার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না প্রত্যক্ষদর্শীরা। আর সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা বলার সময় শিউরে উঠলেন ব্রিজের কাছে বসা এক জন চা বিক্রেতা। চোখের সামনে সাত-আট মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে সেতু থেকে পড়ে তলিয়ে যেতে দেখেন। সেই অভিজ্ঞতার কথায় তিনি জানিয়েছেন।
ওই চা বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমি প্রতি রবিবার ওই সেতুর কাছে চা বিক্রি করি। দুর্ঘটনার সময় ওখানেই উপস্থিত ছিলাম। আমার চোখের সামনেই সেতুর তার ছিঁড়ে যায়। হুড়মুড়িয়ে মাচ্ছু নদীতে পড়ে যান সেতুর উপরে থাকা মানুষেরা। কিছু মানুষ তারের সঙ্গে ঝুলছিলেন। পরে তাঁরাও পা পিছলে নদীতে পড়ে যান। আমার চোখের সামনেই সাত-আট মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে সেতু থেকে পড়ে যেতে দেখলাম। কিচ্ছু করতে পারিনি। সেই দৃশ্য ভয়াবহ। সারা রাত আমি ঘুমাইনি। মানুষকে সাহায্য করে গিয়েছি। সেই দৃশ্য আমি কিছুতেই ভুলতে পারছি না।’’
ওই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি এক দর্শনার্থী সিদ্দিক। তিনি জানিয়েছেন, তিন বন্ধুর সঙ্গে সেতুর উপরে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও তাঁর বন্ধুরা বেঁচে আছেন না মারা গিয়েছেন, তা তিনি জানেন বলেও কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছেন সিদ্দিক।
অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, কিছু জনকে বার বার বারণ করা সত্ত্বেও তাঁরা ওই সেতুর তার ধরে নাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। এর পরই ঘটে বিপর্যয়।
প্রসঙ্গত, মাচ্ছু নদীর উপরের সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। রবিবার সন্ধ্যায় প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪০। উদ্ধার করা হয়েছে ১৭৭ জনকে।
সরকারে তরফে ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারকে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। কেন ভেঙে পড়ল ব্রিজ? তার তদন্ত করতে সরকারের তরফে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।