ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
বিধানসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে গুজরাত। প্রথম দফার আগে তো বটেই, শেষেও স্পষ্ট লড়াইটা আসলে সেয়ানে সেয়ানে। আর সেই উত্তেজনার মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার শেষ হল গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। রাজ্যে মোট ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে এ দিন ৯৩টিতে নির্বাচন। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর ৮৯টি আসনে প্রথম দফার ভোট গ্রহণ হয়েছে। প্রথম দফায় ৬৬.৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। গণনা আগামী ১৮ ডিসেম্বর।
এ দিন মোট ২৫ হাজার ৫৫৮টি বুথে ৮৫১ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তার মধ্যে ৬৯ জন মহিলা প্রার্থী। উত্তর, পূর্ব, মধ্য গুজরাত এবং অমদাবাদ অঞ্চলে এ দিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব। শেষ হয় বিকেল ৫টায়। মোট ২ কোটি ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৭ জন ভোটার এ দিন ভোট দিলেন।
আরও পড়ুন: ভোটের এই গুজরাতে আর যাই থাক, ‘গুজরাত মডেল’ নেই
• অমদাবাদের জামালপুর খড়িয়া জেলায় ভোট দিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।
• বডোদরার আকোতা থেকে ভোট দিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার নয়ন মোঙ্গিয়া।
• ১১৫ নম্বর বুথে ভোটদানের পর সবরমতীর রানিপ এলাকায় নিজের কনভয় থেকে বেরিয়ে উৎসাহী জনতার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়েন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী ‘রোড শো’ করেছেন।
• অমদাবাদের রানিপ এলাকায় নিশান উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
• ভোট দিলেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন কংগ্রেসের জিবাভাই পটেলে।
• বিরামগাঁওয়ে ভোটদানের পর হার্দিক পটেলের দাবি, “কংগ্রেস ১০০টির কাছাকাছি আসনে জয়লাভ করবে।”
• ওই বুথের পোলিং আধিকারিক গৌরাঙ্গ রানা জানিয়েছেন, ইভিএম যন্ত্র ঠিক করা হয়েছে। এখন ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক।
• ছোট উদয়পুরে সোধালিয়া গ্রামের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে গণ্ডগোলের জন্য ঘণ্টাখানেক ভোটদান বন্ধ থাকে।
• অমদাবাদের ভেজালপুরে ভোট দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ভোটদানের পর তিনি বলেন, “গুজরাতবাসীর কাছে আমার আবেদন, আপনার সকলে এগিয়ে আসুন। ভোট দিন। উন্নয়নের অব্যাহত রাখুন।”
• গাঁধীনগরের ভাসান গ্রামে ভোট দেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শঙ্করসিন বাঘেলা।
• বিরামগাঁওতে ভোট দিতে দেখা গেল হার্দিক পটেলের মা-বাবাকে।
• অমদাবাদেরই নারানপুরায় এ দিন ভোট দিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
• গাঁধীনগরে ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেন মোদী।
• সকাল পৌনে ৯টায় অমদাবাদের ঘাটলোডিয়ায় ভোট দিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেল।
গত শনিবার রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হয়। সে দিন দক্ষিণ গুজরাত, সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এবং কাঠিয়াবাড় অঞ্চলে মোট ২ কোটি ১২ লাখ ৩১ হাজার ৬৫২ জন ভোটার ৯৭৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন। রাজ্যে গত ২২ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। আর কংগ্রেস বিরোধী আসনে। এর আগের তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীই ছিলেন এ রাজ্যে বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কিন্তু, এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী। আবার বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের আপন রাজ্যও এই গুজরাত। ফলে বিজেপি-র কাছে এই নির্বাচন সব অর্থেই সম্মান রক্ষার লড়াই। অন্য দিকে, বিরোধী কংগ্রেসও এ বার অনেক চাঙ্গা। ক্ষত্রিয়-হরিজন-আদিবাসী-মুসলিম, এই পরিচিত ভোটব্যাঙ্ক ছাড়াও কংগ্রেস এ বার হাত বাড়িয়েছে পাতিদার, ওবিসি এবং দলিত ভোটব্যাঙ্কের দিকে। অতএব, দেড় দশক পর এ রাজ্যে বিজেপির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু কংগ্রেস। এ রাজ্যে পতিদার এবং পটেল ভোট ১৩ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে লেউভা পটেল ৮.১১ শতাংশ। কড়ভা পটেল ৬.৪২ শতাংশ। মুসলিম ভোট ৯.১ শতাংশের মতো। আদিবাসী বা তফসিলি উপজাতি ভোট প্রায় ১৫ শতাংশ। তফসিলি জাতির ভোট ৭.১ শতাংশ। ব্রাহ্মণ ভোট ১০ শতাংশ।
২০১৫-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসাব বলছে, ২৩টি জেলা পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৯টিতেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। তালুকা পঞ্চায়েত স্তরেও কংগ্রেস অনেক এগিয়ে ছিল বিজেপি-র থেকে। কিন্তু, গুজরাতে শহুরে ভোটও অনেক। সেখানে বিজেপি-র দাপট নাকি এখনও বেশি। শেষ দফাতেও তাই লড়াইটা কিন্তু এক্কেবারে সেয়ানে সেয়ানেই।