Rahul Gandhi

জিডিপি পতনের জন্য দায়ী গব্বর সিং ট্যাক্স, মন্তব্য রাহুলের

রাহুলের দাবি, জিএসটি কোনও কর পদ্ধতি নয়, বরং তা দরিদ্র ভারতবাসীর উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে নেমে এসেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:১০
Share:

জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ রাহুলের। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

করোনা পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে জিডিপির ঐতিহাসিক পতন। তা নিয়ে বিরোধী শিবির লাগাতার আক্রমণ শানিয়েই চলেছে। এ বার পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) নীতি নিয়েও তীব্র সমালোচনার মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। জিএসটি-কে ‘গব্বর সিং ট্যাক্স’ বলে উল্লেখ করে কেন্দ্রকে একহাত নিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। তাঁর দাবি, জিএসটি কোনও কর পদ্ধতি নয়, বরং তা দরিদ্র ভারতবাসীর উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে নেমে এসেছে।

জিএসটি ক্ষতিপূরণ মোটানো নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে টানাপড়েন অব্যাহত। তার মধ্যেই রবিবার টুইটারে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে জিএসটি প্রণয়ন নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন রাহুল। তিনি লেখেন, ‘‘দেশের জিডিপির ঐতিহাসিক পতনের অন্যতম বড় কারণ হল মোদী সরকারের গব্বর সিং ট্যাক্স (জিএসটি)। এর ফলে দেশে অনেক সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ ছোট ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কোটি কোটি মানুষের চাকরি গিয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে যুবসমাজের ভবিষ্যৎ। রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। জিএসটির অর্থই হল আর্থিক সর্বনাশ।’’

রাহুল দাবি করেন, মানুষের ঘাড় থেকে করের বোঝা কম করতে এবং দেশ জুড়ে একটি মাত্র সহজ কর ব্যবস্থা চালু করতে পূর্বতন ইউপিএ সরকার জিএসটি চালু করেছিল। কিন্তু মোদী সরকারের হাতে তা জটিল আকার ধারণ করে। আলাদা আলাদা রেটের ফাঁদে আটকে পড়েন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘আলাদা আলাদা রেট রাখাই বা হয়েছে কেন? সরকার চার রকমের আলাদা রেট এই জন্য রেখেছে, যাতে যাঁদের ক্ষমতা রয়েছে তাঁরা ইচ্ছে মতো বদল ঘটাতে পারেন। আর যাঁদের ক্ষমতা নেই, তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু করতেই না পারেন। দেশের ১৫-২০ জন শিল্পপতির হাতেই শুধুমাত্র এই ক্ষমতা রয়েছে। তাঁদের মর্জি মতো কর আইনের রদবদল ঘটানো যেতে পারে।’’

Advertisement

রাহুলের টুইট।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ৯০ হাজারের বেশি, তবে স্বস্তি দিয়ে দেশে সুস্থতাও সর্বোচ্চ​

Advertisement

কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারছে না বলেই, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন রাহুল। জিএসটি চরম ব্যর্থ বলে উল্লেখ করেন তিনি। রাহুল বলেন, ‘‘এটা শুধুমাত্র সরকারের ব্যর্থতাই নয়, দেশের দরিদ্র মানুষ, ছোট ও মাঝারি ব্যবসার উপর তীব্র আক্রমণ। জিএসটি কোনও কর পদ্ধতি নয়, দরিদ্র ভারতবাসীর উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে নেমে এসেছে। ছোট ছোট দোকানদার, ছোট ও মাঝারি ব্যবসা, কৃষক এবং শ্রমিকদের আক্রমণ করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’’

অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে দিন মোদী সরকারকে একগুচ্ছ সুপারিশ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমও। তিনি বলেন, ‘‘অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে চাহিদা বাড়াতে হবে। তার জন্য দেশের সব থেকে দরিদ্র ৫০ শতাংশ পরিবারের হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। পরিবারগুলিকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্যের জোগান দিতে হবে, তা থেকে যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা নেবেন। পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে আরও বেশি টাকা ঢালতে হবে। জন প্রকল্পগুলিতে প্রয়োজনে মজুত রাখা খাদ্যশস্যকেই পারিশ্রমিক হিসেবে তুলে দিতে হবে মজুরদের হাতে। ব্যাঙ্কগুলির পুঁজি বাড়িয়ে তাদের ধার দিতে সক্ষম করে তুলতে হবে। অবিলম্বে জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যগুলিকে।’’ প্রয়োজনে সরকারকে টাকা ধার করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন চিদম্বরম।

আরও পড়ুন: ‘নতুন নিয়োগে বাধা নেই’, সার্কুলার-বিতর্কে সাফাই কেন্দ্রের​

এর আগে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দেন, করোনা কালে জিএসটি ঘাটতির পরিমাণ বিপুল আকার ধারণ করেছে। কেন্দ্রের হাতে টাকা নেই। তাই ক্ষতিপূরণ মেটানো সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে রাজ্যগুলিকে টাকা ধার করার পরামর্শ দেন তিনি। কিন্তু রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঋণের বোঝা না চাপিয়ে, কেন্দ্রই ধার নিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক বলে যুক্তি দেন পশ্চিমবঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement