সংসদ ভবন। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে রাজি কেন্দ্র। সে রাজ্যের হিংসা পরিস্থিতিতে আলোচনার দাবিতে উত্তাল সংসদে এই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে পীযূষ বলেন, “বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে আলোচনা চায় না। তারা যদি প্রস্তুত থাকে, তবে আমরা দুপুর ২টো থেকে আলোচনায় রাজি।”
অন্য দিকে গত শনিবার এবং রবিবার দু’দিনের সফরে মণিপুরে যাওয়া ২১ জন বিরোধী সাংসদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ২৬টি দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা। সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তাঁরা। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সংসদে মণিপুর ফেরত বিরোধী সাংসদদের বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানায় ‘ইন্ডিয়া’। মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিবৃতি চেয়ে এবং রাজ্যসভায় নোটিস দিয়ে আলোচনার দাবি জানান বিরোধী সাংসদেরা। দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন।
লোকসভায় চিন সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। কাগজ ছুড়ে, স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধী সাংসদের। দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয় লোকসভার অধিবেশন।
গত সোমবার সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর মণিপুর নিয়ে আলোচনা এবং প্রধানমন্ত্রীর জবাব চেয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধীরা। সরকার আলোচনায় রাজি বলে জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। তাঁরা এ-ও বলেন যে, বিরোধীরা আলোচনা চাইছেন না বলেই অধিবেশন ভেস্তে দিচ্ছেন। দুপুর আড়াইটেয় অধিবেশন শুরুর পর বিরোধী-বিক্ষোভ সামাল দিতে আসরে নামেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘সরকার মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি। বুঝতে পারছি না, বিরোধীরা কেন আলোচনা করতে চাইছেন না। মণিপুরের হিংসা নিয়ে দেশের মানুষের সত্য জানার অধিকার রয়েছে।’’ তবে শাহের মন্তব্যে বিরোধীদের বিক্ষোভ থামেনি। স্পিকার ওম বিড়লা জানান, এই নিয়ে উত্তর দিলে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীই দেবেন। মণিপুরে হিংসার ঘটনার সঙ্গে যে হেতু আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি জড়িত, তাই এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে শাহই যা বলার বলবেন। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখতে হবে— এই দাবিতে অনড় থাকেন।
মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’। একই বিষয়ে আলাদা করে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-ও। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে এই প্রস্তাব নিয়ে সংসদে কবে আলোচনা হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার। ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। বিআরএসের হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। নিয়ম মোতাবেক, প্রস্তাব পেশের পর দশ দিনের মধ্যে এই নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়ার কথা।