Electoral Bonds

নির্বাচনী বন্ড বাতিলের পর কোন কোন পথ খোলা? কী করতে পারে সরকার? চলছে জল্পনা

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্বাচনী বন্ড বাতিল করে দিয়েছে। তাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০১
Share:

নির্বাচনী বন্ড বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নির্বাচনী বন্ড বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে কত টাকা অনুদান পায়, সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসতে চলেছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ওই তথ্য তুলে দিতে হবে নির্বাচন কমিশনের হাতে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে কমিশনকে অনুদান সংক্রান্ত তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর সরকার কী করতে পারে, কোন কোন পথ তাদের সামনে খোলা আছে, সেই পথে আদৌ সরকার এগোবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। সরকারি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, এখনও তারা শীর্ষ আদালতের নির্দেশের কাগজপত্র ভাল করে পড়ছে। কী করা যেতে পারে, চিন্তাভাবনা চলছে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনও কাজ সরকার করবে না বলেই বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন। সরকারি সূত্রের দাবি, বিকল্প উপায়গুলি বিবেচনা করা হচ্ছে।

গত ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত একটি সংশোধনী বিল সংসদে পাশ করেছিল সরকার। সে সময়ে সংসদে বিরোধী সাংসদেরা কেউই প্রায় ছিলেন না। ফাঁকা সংসদে বিল পাশ করিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি। নির্বাচনী বন্ডের ক্ষেত্রে তেমন কোনও পন্থা অবলম্বন করা হতে পারে বলে অনেক বিরোধী দল আশঙ্কা প্রকাশ করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটের আগে তেমন কোনও পদক্ষেপ সরকার করবে না।

Advertisement

একই ভাবে নির্বাচনী বন্ড বাতিল হয়ে যাওয়ায় কালো টাকা ফিরে আসার আশঙ্কা করছে সরকার। ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার কথা বলেই নির্বাচনী বন্ড চালু করা হয়েছিল। সরকারি সূত্রের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট যে ব্যাঙ্কগুলিকে অনুদানকারীর তথ্য কমিশনের হাতে তুলে দিতে বলেছে, তা যে কোনও ব্যাঙ্কের নিয়মবিরুদ্ধ। অনুদানকারীর পরিচয় গোপন রাখাই ব্যাঙ্কের নীতি।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্বাচনী বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে। আদালতের তরফে জানানো হয়, নির্বাচনী বন্ড তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনকে লঙ্ঘন করছে। নির্বাচনী বন্ডে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি জানান, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক (এসবিআই) এই ধরনের বন্ড দেওয়া বন্ধ করবে।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৭-র অর্থ বিলের মাধ্যমে আইনে একগুচ্ছ সংশোধনী এনে মোদী সরকার ২০১৮ থেকে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল। এর ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হত। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যেত। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারত। কিন্তু কে, কত টাকা দিচ্ছেন তা বোঝা যেত না।

নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর বিষয়টির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিরোধী দল এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, এতে অস্বচ্ছতাই বাড়বে। বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই, যেখানে বন্ড ভাঙাচ্ছে রাজনৈতিক দল। ফলে কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধা আদায় করছে, তা জানার কোনও উপায় নেই। এখন শীর্ষ আদালতের রায়ের পর কেন্দ্র কোন পথে হাঁটে, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement