গোয়ার সভায় মমতা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
ভোট এলেই তিনি গঙ্গায় ডুব দেন। আবার কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকার না করে গঙ্গাতেই ভাসিয়ে দেন। গোয়ায় তৃণমূলের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এ ভাবেই খোঁচা দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, সোমবারই মোদী তাঁর নির্বাচনীকেন্দ্র বারাণসীতে গিয়ে গঙ্গাস্নান ককে কালভৈরব মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করেই মোদীর এমন পদক্ষেপ বলে বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী পানজিমে সহযোগী দল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি (এমজিপি)-র সঙ্গে যৌথ সভা করেন মমতা। সেখানে এনডিএ জোটের প্রাক্তন শরিক এমজিপি নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে মমতা বলেন, ‘‘এক দিন যাঁরা বিজেপি-কে ক্ষমতায় এনেছিলেন, তাঁরা বুঝেছেন ওই দল কী ভয়ঙ্কর!’’ ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় মাত্র ১৩টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এমজিপি, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি এবং নির্দলদের সহায়তায় সে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে গেরুয়া শিবির। পরে এমজিপি এবং গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি থেকে বিধায়ক ভাঙায়। সে প্রসঙ্গেই মমতার এই মন্তব্য।
নীলবাড়ির লড়াইয়ের প্রচারপর্বে নিয়মিত চণ্ডীপাঠ করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রীকে। মঙ্গলবার পানজিমের জনসভাতেও চণ্ডীপাঠ করেন তিনি।পানজিমের সভায় উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর-খেরি কৃষকহত্যা থেকে মূল্যবৃদ্ধির মতো প্রসঙ্গ এসেছে মমতার বক্তৃতায়। বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) রিপোর্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আকাশের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ভাবে কৃষক খুনের চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘সত্যিটা তো সামনে এসেছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কি এ বার ইস্তফা দেবেন?’’
জনসভায় মমতা দাবি করেন, তৃণমূল-এমজিপি জোটই গোয়ায় বিজেপি-র আসল বিকল্প। শ্রোতাদের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘বিজেপি-কে হারাতে চাইলে ভোট নষ্ট করবেন না।’’ প্রসঙ্গত, সোমবার গোয়ার বেনোলিমের জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভোট ভাগ করতে আসিনি।’’ তিনি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হতে আসেননি বলেও জানান মমতা। মঙ্গলবার তাঁর মন্তব্য, ‘‘গোয়ার মানুষই গোয়া শাসন করবেন।’’
পানজিমের পর গোয়ার আসানোরায় সভা করেন মমতা। সেখানেও কোভিড পরিস্থিতিতে উত্তর ভারতে গঙ্গা-সহ কয়েকটি নদীতে মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘‘বিজেপি গঙ্গাকে অপবিত্র করেছে। ভোট মিটলেই গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে যায়।’’ লখিমপুর-খেরির ঘটনায় ‘সিট’ রিপোর্টের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কেন এখনও ওই বিষয়ে কিছুই বলছেন না।’’ ভোট এলে প্রধানমন্ত্রী মোদী ধ্যানে বসে যান বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গে গোষ্ঠীহিংসা নিয়ে বিজেপি অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ভিডিয়োকে ওরা পশ্চিমবঙ্গের বলে প্রচার করছে।’’ গোয়ায় তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলে বিজেপি যে প্রচার চালাচ্ছে তার জবাবে মমতা বলেন, ‘‘গুজরাতি প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় যেতে পারলে বাঙালি হয়ে আমি কেন পারব না?’’