জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন ডিজি শেষ পাল বৈদ। ফাইল চিত্র।
জঙ্গি হামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে কাশ্মীর উপত্যকার সংখ্যালঘু হিন্দু ও সেখানকার অত্যাচারিত মুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে তাঁদের অস্ত্র প্রশিক্ষণও দেওয়া উচিত। এক সাক্ষাত্কারে এমনটাই জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন ডিজি শেষ পাল বৈদ।
এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মরক্ষার একটা বোধ জাগিয়ে তুলতে সব রকম পন্থা প্রয়োগ করার পথে হাঁটা জরুরি বলেও মনে করেন বৈদ। সম্প্রতি দক্ষিণ কাশ্মীরের অননন্তনাগে কাশ্মীরি পণ্ডিত পঞ্চায়েত প্রধান অজয় পণ্ডিত ভারতীকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তার পর থেকেই উচ্ছেদ হওয়া কাশ্মীরি পণ্ডিতরা তাঁদের সুরক্ষার দাবি জানান সরকারের কাছে। শুধু তাই নয়, উপত্যকার হিন্দু সম্প্রদায়ের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ারও দাবি জানান তাঁরা।
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সেই দাবিকে কার্যত সমর্থন জানিয়েই তাঁদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এই প্রাক্তন ডিজি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই দুই সম্প্রদায়ের হাতে অস্ত্র তুলে দিলে বা তাঁদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিলে বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে, এমনটা নয়।”
কী ভাবে এই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে তার একটা নমুনাও দিয়েছেন বৈদ। তিনি বলেন, “উপত্যকায় গ্রাম প্রতিরোধ কমিটি বা ভিলেজ ডিফেন্স কমিটি (ভিডিসি) গড়ে তুলতে হবে। তবে এটা করতে গেলে পুরো পরিকল্পনা করেই করতে হবে। বিষয়টা কঠিন ঠিকই, তবে অসম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: ৭৩ দিনে প্রথম ৫ হাজার, পরের ৫ হাজার সংক্রমণ মাত্র ১৩ দিনে
আরও পড়ুন: মহাকালীর উৎসে ঘনাচ্ছে বিবাদ, খুব সতর্ক পা ফেলতে হবে ভারতকে
এ প্রসঙ্গে কয়েকটি উদাহরণও দেন বৈদ। ১৯৯৫-তে তিনি তখন উধমপুরের এসএসপি। সেই সময় ওই এলাকায় জঙ্গিদের ব্যাপক উপদ্রব ছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথম ভিডিসি গড়ে তোলা হয় বাগানকোটে। পরে জম্মু ডিভিশনের চন্দ্রভাগা উপত্যকা এলাকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষার জন্য তত্কালীন জম্মু-কাশ্মীর সরকার বেশ কয়েকটি ভিডিসি গঠন করে।
বৈদ আরও বলেন, “শ’য়ে শ’য়ে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা যখন উপত্যকা ছেড়ে চলে যান, তার পরই চন্দ্রভাগা উপত্যকার হিন্দুদের উপর হামলা শুরু করে জঙ্গিরা। ওই এলাকায় প্রচুর হিন্দুকে হত্যা করে জঙ্গিরা। কিন্তু ভিডিসি গঠন করে যখন ওই এলাকার হিন্দু এবং অত্যাচারিত মুসলিমদের আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেই পরিকল্পনা ব্যাপক সফল হয়। চোখে চোখ রেখে জঙ্গিদের হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এই দুই সম্প্রদায়।” যে হারে এই দুই সম্প্রদায়ের উপর বার বার জঙ্গি হামলা হচ্ছে, এ বার সময় হয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর। নিজেদের রক্ষা করার। আর সেই রক্ষাকবচ গড়ে তুলতে গেলে ভিডিসি গঠনের পাশাপাশি এই দুই সম্প্রদায়কে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বৈদ।