সনিয়া গাঁধী এবং গুলাম নবি আজাদ।
সনিয়া গাঁধীকে ‘পরামর্শ’ দিতে গেলেন কংগ্রেসের বদলপন্থী গোষ্ঠী জি-২৩র নেতা গুলাম নবি আজাদ। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর দলের সম্পূর্ণ সংস্কারের দাবি জানিয়েছিল জি-২৩। শুক্রবার সনিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর গুলাম জানিয়েছেন, বৈঠক ভাল হয়েছে। দলের জন্য তাঁদের পরামর্শগুলি তিনি সনিয়াকে জানিয়েছেন। এর পর ফের জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কি নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে কিছু ভাবতে চলেছে কংগ্রেস?
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেসের আসন বাড়েনি। ফলে প্রশ্ন উঠছিল, এ বার কংগ্রেসের মুখ কে হবেন? পাঁচ রাজ্যে ব্যর্থতার পর দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন সনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু তাতেও একযোগে আপত্তি জানান ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যেরা। শুক্রবারের বৈঠকের পর গুলামও জানিয়েছেন, দলের সভানেত্রী হিসাবে সনিয়াকে মেনে নিতে আপত্তি নেই তাঁদের। তাঁদের অর্থাৎ কংগ্রেসের বদলপন্থী জি-২৩ গোষ্ঠীর। গুলাম যে গোষ্ঠীর নেতা। সদস্য শশী তরুর, কপিল সিব্বল, আনন্দ মিশ্র, মণীশ তিওয়ারি, ভূপিন্দর সিংহ হুডা, রাজ বব্বরের মতো কংগ্রেসের পুরনো বিশ্বস্ত এবং বড় নেতা। তাঁদের হয়েই গুলাম বলেছেন, ‘‘দলের সমস্ত সদস্য চেয়েছেন, সনিয়াই সভানেত্রী হোন। আমাদের শুধু অন্য কয়েকটি পরামর্শ দেওয়ার ছিল। আমরা সেটাই ওঁকে জানিয়েছি।’’ তবে যেটা গুলাম জানাননি, তা হল সনিয়ার সঙ্গে দলের নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর কোনও কথা হয়েছি কি না বা কী বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার ছিল তাঁদের সনিয়াকে।
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ অংশের ওই গোষ্ঠী দীর্ঘ দিন ধরেই দলের ‘পূর্ণ সময়’-এর নেতৃত্বের দাবি জানিয়ে আসছে। এমন নেতা যার সঙ্গে তৃণমূল স্তরের মানুষের যোগাযোগ তৈরি হবে। একই সঙ্গে ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সদস্যপদ পাওয়া এমনকি, দলের নতুন নেতা তৈরির প্রক্রিয়ার উপরেও জোর দিয়েছে জি-২৩। বুধবারই গুলামের বাড়িতে একটি বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ অংশের নেতারা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে কংগ্রেসের দীর্ঘ পরিবারতন্ত্রের ঐতিহ্যকে সরিয়ে অন্য নেতাদের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছিল। তার ৪৮ ঘণ্টা পরেই গুলাম দেখা করলেন সনিয়ার সঙ্গে।
গুলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বৈঠকে কি দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে জি-২৩-র প্রস্তাবের প্রসঙ্গও আলোচিত হয়েছে? জবাবে জি-২৩ নেতা গুলাম জানিয়েছেন, বৈঠক ভাল হয়েছে। আপাতত আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে একজোট হয়ে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।