বাঁ দিকে ওলাফ শোলৎজ়, ডান দিকে নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
এক দিকে খলিস্তানি তৎপরতা নিয়ে কানাডা এবং আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েন। অন্য দিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া সফর নিয়ে পশ্চিমী দুনিয়ার ‘ক্ষোভ’— এই আবহেই শুক্রবার ভারত সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়ের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দু’দিনের ভারত সফরে বৃহস্পতিবার দিল্লি এসে পৌঁছেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর। শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রাতরাশ বৈঠকে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় তাঁদের। এর পরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে সরকারি প্রতিনিধিস্তরের সপ্তম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে হাজির ছিলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মোদীর সঙ্গে শোলৎজ়ের বৈঠকে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, শক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি স্থান পেয়েছে। উঠেছে রাশিয়া-ইউক্রেন এবং পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রসঙ্গও।
বৈঠকের পরে শোলৎজ় বলেন, ‘‘আমরা আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে কথা বলেছি। কারণ এই পদ্ধতি উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য।’’ ভারত যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধ বন্ধ করতে আগ্রহী, আগে একাধিক বার সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী। ২০২২ সালের জুন মাসে ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বার্লিনে জি৭ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বৈঠকে ‘পর্যবেক্ষক’ হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন মোদী। সেখানে তিনি প্রকাশ্যে আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের উপর জোর দিয়েছিলেন।
পরবর্তী সময়ে ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাত প্রসঙ্গেও একই ‘সমাধানসূত্রে’র কথা বলেছিলেন তিনি। জার্মান চ্যান্সেলর শুক্রবার বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সমাধান না মেলার কারণেই মধ্যপ্রাচ্য (পশ্চিম এশিয়া) আজ অগ্নিগর্ভ।’’ নয়াদিল্লি থেকে গোয়ায় যাওয়ার কথা শোলৎজ়ের। আরব সাগরের উপকূলে সৌজন্য সফরে আসা দুই জার্মান যুদ্ধজাহাজ, ব্যাডেন-উয়ের্টেমবার্গ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট অ্যাম মেইনের নৌসেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে চাপে ফেলতে ভারতের সঙ্গে অক্ষ তৈরি করতে আগ্রহী জার্মানি। সেই উদ্দেশ্যেই নয়াদিল্লির সঙ্গে সামরিক বোঝাপড়া বাড়াতে চাইছেন শোলৎজ়। ২০২১ সালে চ্যান্সেলর নির্বাচিত হওয়ার পরে এই নিয়ে তৃতীয় বার ভারতে এলেন তিনি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশে প্রথম দিল্লিতে এসেছিলেন শোলৎজ়। এর পরে সে বছরেরই সেপ্টেম্বরে, জি২০ শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে।