শিল্পপতি গৌতম আদানি (সামনে), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (পিছনে) — ফাইল ছবি।
এ বছরের গোড়ায় আমেরিকার শর্ট সেলার ফার্ম হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর ভিত নড়ে গিয়েছিল ভারতের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা আদানি গোষ্ঠীর। মূলত নির্মাণক্ষেত্রে কাজ করা আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর কমছিল হু-হু করে। এর পরেই ঋণের বোঝা কমিয়ে ব্যবসায়িক পরিসর বৃদ্ধির পথে হাঁটা শুরু করেন আদানি গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানি। সেই বদলে যাওয়া নীতিরই অন্যতম পদক্ষেপ হিসাবে আদানিদের অম্বুজা সিমেন্ট কিনে নিল সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রিজ়ের অংশীদারি। বস্তুত, হিন্ডেনবার্গকাণ্ডের পর এটিই আদানির বৃহত্তম অধিগ্রহণ পদক্ষেপ।
অম্বুজা সিমেন্টস জানিয়েছে, সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রিজ়ের প্রোমোটার গোষ্ঠী রবি সঙ্ঘী এবং পরিবারের হাত থেকে ৫৬.৭৪ শতাংশ অংশীদারি কিনেছে তারা। এ জন্য খরচ হচ্ছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। তার পরে খোলা বাজার থেকে সাধারণ লগ্নিকারীদের হাতে থাকা আরও ২৬ শতাংশ শেয়ার হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তা সফল হলে আরও ৭৬৭.১৫ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তখন সব মিলিয়ে সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রিজ়ের ৮২.৭৪ শতাংশ শেয়ার অম্বুজা সিমেন্টসের হাতে আসবে।
অধিগ্রহণ পর্ব চলাকালীন গৌতম জানিয়েছিলেন, তাঁর লক্ষ্য ২০২৮ সালের মধ্যে সংস্থার সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ কোটি টনে নিয়ে যাওয়া। আর এই লক্ষ্যেই বিপুল অর্থ খরচ করে সঙ্ঘীকে অধিগ্রহণ। যদিও এই অধিগ্রহণেও চলে এসেছে রাজনীতির কথা। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও ‘সরকারি যন্ত্রে’র অপব্যবহার হয়েছে। অধিগ্রহণের ‘ক্রোনেলজি’ প্রকাশ করে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেন, ভারতের তৃতীয় সর্ববৃহৎ সিমেন্ট উৎপাদক শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে অধিগ্রহণ নিয়ে কথা চলছিল সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রিজ়ের। জয়রামের দাবি, সঙ্ঘী অধিগ্রহণের কথাবার্তা শুরু হয়েছে জানতে পেরেই শ্রী সিমেন্টের দফতরে আয়কর দফতরের অভিযান চালানো হয়। তার পরেই আচমকা দৌড় থেকে সরে দাঁড়ায় শ্রী সিমেন্ট। কার্যত ফাঁকা মাঠে গোল করে বেরিয়ে যান আদানি। জয়রাম বলেন, ‘‘আমরা যা দেখছি তা হল, প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুদের আরও ধনী করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রবণতা। ইডি এবং সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি বিরোধী দলগুলিকে ভাঙতে এবং বিরোধী-শাসিত সরকারগুলিকে ফেলে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ জয়রামের দাবি, নিজের বন্ধুদের আরও আরও ধনী করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী মোদী কোনও চেষ্টাই বাদ রাখছেন না।