ফাইল চিত্র।
হিজাব নিয়ে বিক্ষোভের জেরে কিছু সময় বন্ধ থাকার পরে আগামিকাল ফের উচ্চ বিদ্যালয়গুলি খুলে যাচ্ছে কর্নাটকে। শান্তি ও সুস্থিতি বজায় থাকবে বলে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই আশা প্রকাশ করেছেন। তবে প্রি-ইউনিভার্সিটি এবং ডিগ্রি স্তরের কলেজগুলি খোলার বিষয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বোম্মাই এ দিন বলেন, ‘‘দশম শ্রেণি পর্যন্ত হাই স্কুল আগামিকাল খুলে দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত জেলার ডেপুটি কমিশনার, পুলিশের এসপি এবং ডেপুটি ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশনকে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্কুলগুলির শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে শান্তি-বৈঠক করতে, যাতে সম্প্রীতি বজায় থাকে।’’ কলেজ খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে পর্যালোচনা বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে বিক্ষোভের জেরে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। হিজাব-বিতর্কে বিদেশিদের বা কোনও বিশেষ সংগঠনের হাত রয়েছে বলে সরকার মনে করছে কি না জানতে চাওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত যে সমস্ত খবর উঠে এসেছে, তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা নিজেরাও এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন।’’
তবে কর্নাটকের যে উদুপি জেলায় হিজাব ঘিরে বিক্ষোভ ও বিতর্কের সূত্রপাত, সেখানকার সমস্ত স্কুল চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আগামিকাল ভোর ৬টা থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টা পর্যন্ত স্কুলে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। অপ্রীতিকর ঘটনার সম্ভাবনা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। এ দিকে, হিজাব-বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সকলের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করার বিষয়টিকে এবং ভারতীয় সংবিধানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিটি নাগরিকের উচিত এই দু’টি বিষয় মাথায় রাখা। বিষয়টি বিচারাধীন, তাই আর কিছু বলব না।’’ এ দিকে, বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেছেন কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক জ়ামির আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘‘কিছু মহিলা হিজাব পরেন না বলেই ভারতে ধর্ষণের হার সর্বোচ্চ।’’
হিজাব পরার অধিকার চেয়ে কর্নাটক হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া মুসলিম ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন আইনজীবী দেবদত্ত কামাত। কিন্তু তার জেরে হিন্দুত্ববাদীরা নিশানাও করেছে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে দেবদত্তের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন কারওয়ারের রামকৃষ্ণ আশ্রমের প্রধান স্বামী ভবেশানন্দ।