খেলা দেখতে আসুন! দিল্লিতে নিঃসঙ্গ ক্রোট রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ ফরাসি দূতাবাসের

নয়াদিল্লির মাঠে একেবারেই একলা পড়ে যাওয়ায় তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফ্রান্সের নয়াদিল্লির দূতাবাস! রবিবার রাতে সেখানে এলাহি আয়োজন। বড় পর্দা, শব্দ-বাক্স, সুখাদ্য এবং সুরার বন্যা— সব মিলিয়ে পুরোদস্তুর কার্নিভাল! শত্রু মিত্র একাকার সেখানে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৬:১৯
Share:

পিটার লিউবিচিচ

মন পড়ে তাঁর ক্রোয়েশিয়ার দক্ষিণ উপকূলের প্রাচীন শহর দুব্রভ্‌নিকে। সেখানকার ঐতিহাসিক দেওয়ালে পর্দা টাঙিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার তোড়জোড় এত ক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু নয়াদিল্লির মতিবাগে তিন কামরার ফ্ল্যাটে ক্রোয়েশিয়ার দূতাবাসে বড়সড় পর্দা টাঙানোর সুযোগ কই রাষ্ট্রদূত পিটার লিউবিচিচের? পর্দা টাঙিয়ে হবেটাই বা কী! তাঁর পরিবার ছাড়া এই মুহূর্তে নয়াদিল্লিতে বসবাসকারী ক্রোয়েশিয়ার নাগরিকের সংখ্যা শূন্য! দূতাবাসের বাকি দুই ক্রোয়েশীয় অফিসার ছুটি নিয়ে ঘরমুখো হয়েছেন। দেশের ফুটবল দল যখন এই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে, কে আর প্রবাসে থাকতে চায়?

ক্রোয়েশিয়া দূতাবাস সূত্রে জানানো হচ্ছে— রবিবার রাতে কী ভাবে খেলা দেখবেন, রাষ্ট্রদূত পিটার তা নিয়েই ভাবনা চিন্তা করছেন। তিনটি বাছাই রয়েছে। প্রথমটি, আঙুর থেকে তৈরি ক্রোয়েশিয়ার ঘরে তৈরি ওয়াইন ‘রাকিজা’ নিয়ে বাড়িতেই টিভি-র সামনে বসা। ক্রোয়েশিয়ার প্রবাদ— ‘রাকিজা’ নিছক পানীয় নয়, শত্রুবিনাশীও! সুতরাং বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে ফ্রান্সের মোকাবিলা করার সময়ে কিছু বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ক্রিম-মাশরুম শস দিয়ে পাস্তা সহযোগে ‘রাকিজা’-র আঁচ পোয়ানোটা ফেলনা প্রস্তাব নয়।

Advertisement

দ্বিতীয়ত, বড় স্ক্রিনে খেলা দেখতে তাঁকে সপরিবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে নয়াদিল্লির জাতীয় প্রেস ক্লাব। দু’দেশের সম্পর্ক ক্রোয়েশিয়ার জন্মেরও বহু আগের। নেহরুর বন্ধু সাবেক নির্জোট আন্দোলনের নেতা যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো ছিলেন ক্রোয়েশিয়ারই মানুষ।

তবে তিন নম্বর পরিকল্পনাটি নিঃসন্দেহে অভিনব। ফুটবল ফাইনালের প্রতিপক্ষ দেশের রাষ্ট্রদূত

নয়াদিল্লির মাঠে একেবারেই একলা পড়ে যাওয়ায় তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফ্রান্সের নয়াদিল্লির দূতাবাস! রবিবার রাতে সেখানে এলাহি আয়োজন। বড় পর্দা, শব্দ-বাক্স, সুখাদ্য এবং সুরার বন্যা— সব মিলিয়ে পুরোদস্তুর কার্নিভাল! শত্রু মিত্র একাকার সেখানে।

তিনটি বিকল্পের কোনটা গ্রহণ করবেন, সে ধন্দ অবশ্য এখনও কাটেনি ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতের। তবে উত্তেজনায়, আবেগে আপ্লুত তিনি। খুব প্রয়োজন ছাড়া কারও সঙ্গে বিশেষ দেখা করছেন না। মাঝের সময়টা কোনও মতে কাটিয়ে দেখতে চান দেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয়। আনন্দবাজারকে জানালেন, ‘‘এই মহাযুদ্ধে ভারতের মানুষ যে আমাদের দেশকে সমর্থন করছেন, সে খবর পেয়েছি। আমি কৃতজ্ঞ।’’

তবে ভারতীয় সমর্থকদের এখনই ধন্যবাদ দিতে চান না পিটার। জানালেন, রবিবার রাতে সেটা দেবেন, ক্রোয়েশিয়া বিশ্বকাপটা জেতার পরেই!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement