প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। —ফাইল চিত্র
দেশে কর্মসংস্থানের বেহাল দশার জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোটবন্দিকেই দায়ী করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ভাবনাচিন্তা না করে নোটবন্দি করার জন্যেই দেশে বেকারত্বের হার বেড়েছে বলে মঙ্গলবার কেরলে আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে মন্তব্য করলেন মনমোহন। রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তুলে অর্থনীতিবিদ মনমোহনের তোপ, এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক।
পশ্চিমবঙ্গের মতো কেরলেও বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যে এক দফায় ভোট হবে ৬ এপ্রিল। ভোটের আগে রাজীব গাঁধী ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ আয়োজন করেছিল ‘প্রতীক্ষা ২০৩০’ নামে একটি সম্মেলনের। সেখানেই ভার্চুয়ালে যোগ দিয়ে দেশের বেকারত্বের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মনমোহন বলেন, ‘‘বেকারত্বের হার ভয়াবহ। অসংগঠিত ক্ষেত্র কার্যত ভেঙে পড়েছে। এই সঙ্কটের জন্য দায়ী ২০১৬ সালের অপরিকল্পিত নোটবন্দির সিদ্ধান্ত।’’
২০১৭-১৮ সালে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৪৫ বছরে সর্বনিম্ন। তার পরেও সেই পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। তার মধ্যে করোনা এসে পড়ায় কর্মসংস্থানের হার আরও খারাপ হয়েছে। কার্যত মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রের। দুই ইস্যুতেই কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মনমোহন।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তুলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো মুখ্যমন্ত্রীরা বরাবরই এ নিয়ে সরব। মনমোহনও কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দর্শনের অন্যতম ভিত্তি হল যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এবং রাজ্যগুলির সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা-পর্যালোচনা। সংবিধানে তেমনটাই বলা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় কোনও আলোচনাই করে না।’’
কেরলে বিধানসভা ভোটে মূলত দুই শক্তির মধ্যে লড়াই হয়— ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা ইউডিএফ এবং লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এলডিএফ। ইউডিএফ জোটে মূল শক্তি কংগ্রেস। আসন্ন নির্বাচনে ইউডিএফ ভাল ফল প্রকাশ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মনমোহন।