কোঝিকোড়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট দীপক শাঠে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
ভারতীয় বায়ুসেনার প্রশিক্ষণপর্বে মর্যাদাসূচক ‘সোর্ড অফ অনার’ পদক জিতেছিলেন তিনি। ফাইটার পাইলট হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে কোঝিকোড় বিমানবন্দরে নিজের জীবনের বিনিময়ে যাত্রীদের বড় অংশের প্রাণরক্ষা করলেন এয়ার ইন্ডিয়ায় আইএক্স ১৩৪৪-এর পাইলট দীপক শাঠে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, স্কোয়াড্রন লিডার (অবসরপ্রাপ্ত) দীপক এবং তাঁর সহকারী (কো-পাইলট) অখিলেশ কুমারের তৎপরতাতেই মৃতের তালিকা দীর্ঘতর হয়নি। দীপকের পাশাপাশি অখিলেশও প্রাণ হারিয়েছেন দুর্ঘটনায়।
কোঝিকোড়ের কারিপুর বিমানবন্দরে নামার কথা ছিল সন্ধে ৭টা বেজে ২৭ মিনিটে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিমানটির অবতরণে সমস্যা হয়। ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার ২৪ জানাচ্ছে, দু’বার নামতে গিয়েও ব্যর্থ হয় বিমানটি। ফলে আকাশে বেশ কিছুক্ষণ চক্কর কাটে সেটি। সে সময়ই পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করেছিলেন দীপক। অতি কম দৃশ্যমানতার মধ্যে ১৩ বছরের পুরনো বোয়িং ৭৩৭-৮ নিয়ে অবতরণের মুখে তাই বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে প্রবল বৃষ্টিতে ছোট্ট ‘টেবিলটপ রানওয়ে’ থেকে পিছলে খাদে পড়ে দু’টুকরো হলেও বিমানে বিস্ফোরণ ঘটেনি।
দীপক ও অখিলেশ বেশ কিছুক্ষণ আকাশে চক্কর কেটে বিমানের জ্বালানিও কমিয়ে এনেছিলেন। ফলে কোঝিকোড় বিমান দুর্ঘটনায় আগুন এবং বড় প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। পুণের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (এনডিএ) এবং হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমির প্রাক্তনী দীপক দীর্ঘ ২২ বছর বায়ুসেনায় নানা ধরনের বিমান চালিয়েছেন। বেঙ্গালুরুর হ্যাল (হিন্দুস্থান অ্যারোনটিস লিমিটেড)-এও পাইলটের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ফলে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলার প্রশিক্ষণ তাঁর ছিল। শুক্রবার রাতে তাঁর সময়োচিত প্রয়োগেই বেঁচেছে অনেকগুলি প্রাণ।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরী
বায়ুসেনা থেকে অবসরের পরে কমার্শিয়াল পাইলট হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৩৭ বিমান চালানো শুরু করেছিলেন দীপক। রানওয়ে দৈর্ঘ্যে ছোট হওয়ার কারণে বোয়িং ৭৭৭ এবং এয়ারবাস এ৩৩০-এর মতো বড় বিমান যে কোঝিকোড় বিমানবন্দর ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে, সে কথাও অজানা ছিল না তাঁর। বিপদ জেনেও যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল ভূষণ গোখলে শনিবার জানান, এনডিএ-র ৫৮ নম্বর ব্যাচে ছিলেন তাঁরা। ১৯৮১-ক জুনে প্রশিক্ষণের শেষে ‘সোর্ড অফ অনার’ সম্মান জিতে নিয়েছিলেন দীপক।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ধনী তালিকায় চার নম্বরে উঠলেন মুকেশ অম্বানী