হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে আচমকাই চলে গেলেন সুষমা স্বরাজ

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আচমকা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন সুষমা স্বরাজ। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৫
Share:

মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা ২৩ মিনিটে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছিলেন, ‘‘এই দিনটা দেখার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’’ তার কিছু ক্ষণ পরে ফোন আসে আইনজীবী হরিশ সালভের। তাঁকে বলেন, বুধবার বাড়িতে এসে যেন এক টাকা নিয়ে যান! কুলভূষণ যাদব মামলা লড়ার জন্য ওই এক টাকাই ফি নেবেন হরিশ!

Advertisement

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আচমকা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন সুষমা স্বরাজ। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই এ বার লোকসভা ভোটে লড়েননি। অনেকে ভেবেছিলেন, তবু হয়তো নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মন্ত্রী করবেন। কিন্তু সেই ফোন আসেনি। সুষমা অবশ্য শপথের দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে দর্শকাসনে গিয়ে বসেছিলেন। আর দলের জন্য শেষ যে-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সেটি বাংলার বিজেপি কর্মীদের উপরে আক্রমণ নিয়ে গণশুনানি।

আজ রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বুকে ব্যথা নিয়ে দিল্লির এমসে ভর্তি হন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা। ছুটে যান হর্ষ বর্ধন, স্মৃতি ইরানি, প্রকাশ জাভড়েকরের মতো মন্ত্রীরা। গভীর রাতে যান অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ। মোদী টুইট করেন, ‘‘সুষমা স্বরাজ দুর্দান্ত বক্তা ও অসাধারণ সাংসদ ছিলেন। দল নির্বিশেষে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল।’’ দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের মধ্যেই সুষমার মৃত্যুর খবর পান রাহুল গাঁধীও। তিনিও লেখেন, ‘‘খবরটা শুনে স্তম্ভিত। অসাধারণ নেত্রী। ভাল বক্তা। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল সকলের কাছে।’’ ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা লিখে টুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

Advertisement

মূলত টুইটকে হাতিয়ার করেই মোদী সরকারের আগের মেয়াদে বিদেশ মন্ত্রককে নয়া উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন সুষমা। বিশেষত বিদেশে অসুবিধায় পড়া ভারতীয় নাগরিকেরা তাঁকে টুইট করলেই সক্রিয় হয়ে উঠতেন তিনি। চিকিৎসার প্রয়োজনে পাকিস্তানি নাগরিকেরা ভিসা সমস্যায় পড়লে তাঁদেরও মুশকিল আসান ছিলেন সুষমা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম তাঁকে ‘সুপার মম’ আখ্যা দেয়।

সুষমার রাজনৈতিক জীবন শুরু এবিভিপি-র সদস্য হিসেবে। জরুরি অবস্থার পরে বিজেপিতে যোগ দেন। ১৯৭৭ সালে দেবীলালের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি হরিয়ানায় ক্ষমতা দখল করলে ২৭ বছর বয়সে শিক্ষামন্ত্রী হন সুষমা। ১৯৯০ সালে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে জাতীয় রাজনীতিতে আসেন। ১৯৯৮ সালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির ঘটনায় সরকার পড়ে যাওয়ায় জাতীয় রাজনীতিতে ফিরে যান তিনি। বাজপেয়ী সরকারে প্রথমে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক এবং পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব পান। ২০০৯-১৪ সাল পর্যন্ত লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিজেপির প্রধান মুখ ছিলেন তিনি। দলে লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন।

আজ রাতেই সুষমার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাসভবনে। তাঁর স্বামী ও মেয়ে রয়েছেন সেখানে। বুধবার দুপুর তিনটেয় শেষকৃত্য হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement