প্রাক্তন সেনাপ্রধান মনোজমুকুন্দ নরবণে। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা ও নৌসেনা— তিন ক্ষেত্রই তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের সূচনায়। নৌসেনা ও বায়ুসেনার কাছে এটি ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। নিজের বই ‘ফোর স্টারস অব ডেস্টিনি’তে সম্প্রতি এই তথ্য ফাঁস করেছেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান মনোজমুকুন্দ নরবণে। একই সঙ্গে নরবণে জানিয়েছেন, ‘অগ্নিবীর’দের জন্য সরকার প্রথমে যে বেতন নির্ধারণ করেছিল, তা তাঁদেরই চেষ্টায় বেড়েছিল।
‘ফোর স্টারস অব ডেস্টিনি’-র খবরটি এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ লিখেছেন, ‘সাংসদ সাসপেন্ডের খবরের মাঝে এই খবরটি হারিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। নরবণের কথায় প্রকাশ, কোনও যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়াই অগ্নিপথের সূচনা হয়।’
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, নরবণে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘টুর অব ডিউটি’ বলে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়ে যান তিনি। তাতে স্রেফ সেনায় স্বল্পকালীন নিয়োগের বিষয়টি বলা ছিল। কোভিড ও গলওয়ানে সংঘর্ষের কারণে সেই আলোচনা এগোয়নি। তার পরেই ২০২২ সালে অগ্নিবীর প্রকল্পের সূচনা। নরবণে এ-ও জানান, শুরুতে অগ্নিবীরদের বেতন ছিল মাসে ২০ হাজার টাকা। পরে তাঁদেরই চেষ্টায় সেটি ৩০ হাজার হয়। নরবণের মতে, বেতন-সহ সমগ্র বিষয়টি একেবারে মেনে নেওয়া যায় না। প্রাক্তন সেনাপ্রধান লিখেছেন, ‘আমরা এক জন প্রশিক্ষিত জওয়ান চেয়েছিলাম। যিনি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত থাকবেন। এক জন সেনাকর্মীর সঙ্গে নিশ্চয়ই দিনমজুরের তুলনা হয় না’?
এখানেই থামেননি প্রাক্তন সেনাপ্রধান। তিনি লিখেছেন, ‘অগ্নিপথ প্রকল্প জানার পরে সেনাবাহিনী বিস্মিত হয়েছিল। কিন্তু নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনা একে বারে হতবাক হয়ে গিয়েছিল’।
নরবণের বইটিকে অস্ত্র করে আরও এক বার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করেছে কংগ্রেস। দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের টুইট, ‘অগ্নিপথ/অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে যা ভাবা হয়েছিল, তা উনি (নরবণে) সেগুলিই নিশ্চিত করেছেন। এই প্রকল্প নিয়ে যে সব সুপরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, সরকার তা বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে’।
সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারও। এক্স হ্যান্ডলে তাঁর তোপ, ‘নরবণের কথায় প্রকাশ, সেনা নয় বরং প্রধানমন্ত্রীর দফতরই দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর অনুচরেরা কিন্তু কখনও গুলির সামনে বা যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়াননি’।