তৎকালীন বিচারক রায় দিয়েছিলেন, প্রদত্ত নথিপত্রে অভিযুক্তের মৃত্যুর প্রমাণ মিলেছে৷ ফলে এই মামলা চালানোর আর যুক্তি থাকতে পারে না৷ ছ’বছর পরে ওই একই ট্রাইবুনালের বর্তমান সদস্য শ্যামাচরণের বাড়িতে নোটিস পাঠিয়েছেন৷ আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে তাঁকে ট্রাইবুনালে গিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে৷
প্রতীকী ছবি।
মৃত ব্যক্তির নামে নোটিস পাঠিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ চেয়েছে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল! অসমের কাছাড় জেলায় এমন ঘটনায় স্তম্ভিত উধারবন্দের শ্যামাচরণ দাসের পরিজনেরা৷ তবে তাঁর কন্যা বেবি দাস জানিয়েছেন, আইনে আপত্তি না থাকলে তাঁরা প্রয়াতের প্রতিনিধি হিসাবে এই মামলা লড়তে চান৷
২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন শ্যামাচরণ৷ ফরেনার্স ট্রাইবুনালও সে সম্পর্কে অবগত৷ কারণ ওই একই ট্রাইবুনালে আগে থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল৷ তাঁকে তখন সন্দেহভাজন ভোটার বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল৷ প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুবিধে থেকে বঞ্চিত গোটা পরিবার৷ মৃত্যুর পরে ট্রাইবুনাল মামলাটি খারিজ করে দেয়৷
তৎকালীন বিচারক রায় দিয়েছিলেন, প্রদত্ত নথিপত্রে অভিযুক্তের মৃত্যুর প্রমাণ মিলেছে৷ ফলে এই মামলা চালানোর আর যুক্তি থাকতে পারে না৷ ছ’বছর পরে ওই একই ট্রাইবুনালের বর্তমান সদস্য শ্যামাচরণের বাড়িতে নোটিস পাঠিয়েছেন৷ আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে তাঁকে ট্রাইবুনালে গিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে৷
নোটিস দেখেই পরিবারের সদস্যেরা বাক্যহীন৷ তাঁর বিধবা পত্নী সুলেখা দাস বলেন, ‘‘অসহায়ত্বটা আরও বেড়ে গেল৷’’ তাঁকেও পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নোটিস পাঠিয়েছিল৷ একতরফা রায়ে ট্রাইবুনাল তাঁকে বিদেশি বলে ঘোষণা করে৷ পরে পুলিশ এক দিন বাড়ি থেকে তাকে তুলে এনে শিলচর সেন্ট্রাল জেলে পুরে দেয়৷ করোনার দরুন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেড় বছর ধরে অবশ্য জামিনে মুক্ত সুলেখা৷
সুলেখার কন্যা বেবি দাস বললেন, ‘‘মায়ের মামলায় একতরফা রায়ে বিদেশি ঘোষণার বিরুদ্ধে যখন লড়াই চলছে, তখন মৃত বাবার নামে নোটিস আমাদের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিল৷ তবে এই নোটিস নিয়েই আমরা ট্রাইবুনালে হাজির হব৷’’ তাঁর কথায়, শ্যামাচরণ ও সুলেখা দু’জনেরই ভারতীয় নাগরিকত্বের পর্যাপ্ত নথি রয়েছে৷ ১৯৬৫ ও ১৯৭০ সালের ভোটার তাঁরা৷ কিন্তু সে সব দেখানোর সুযোগই মেলেনি৷ মানবাধিকার কর্মী কমল চক্রবর্তী এ সবের জন্য পুলিশকে দোষারোপ করেন৷ বলেন, ‘‘ট্রাইবুনালে রিপোর্ট পাঠানোর আগে অভিযুক্তদের নথিপত্র দেখতে চাওয়ার কথা পুলিশের৷ পুলিশ যে কোনও নথি না দেখেই রিপোর্ট করে, মৃতের নামে নোটিসেই তা প্রমাণিত৷’’
পুলিশ কর্তারা বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন৷