ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)। — ফাইল চিত্র।
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় সংঘাতের অবসান ঘটাতে ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ভারত এবং চিন। সোমবার এই ঘোষণা করেছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশরি। তিনি বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে আমরা চিনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহমতে এসেছি।’’
আগামী ২২-২৪ অক্টোবর ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির (ভারত, রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা) শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে রাশিয়া যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লি-বেজিং সমঝোতায় পৌঁছল। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন।
গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, ডেপসাং উপত্যকা-সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা মেটেনি।
তা ছাড়া, ২০২০-র এপ্রিলের আগে ভারতীয় জওয়ানেরা ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত টহল দিলেও নতুন ব্যবস্থায় ফিঙ্গার-৫ পেরোতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল। নতুন সমঝোতা কী কী শর্তের ভিত্তিতে হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি বিদেশ সচিব। সমঝোতার শর্ত হিসাবে কোন কোন এলাকাকে ‘বাফার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানাননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে আলোচনা হয়েছে তার পরিণতিতে ভারত-চিন সীমান্ত এলাকায় এলএসি বরাবর টহলদারি ব্যবস্থার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। ২০২০ সাল থেকে ওই অঞ্চলে যে সমস্যাগুলি দেখা দিয়েছিল, অবশেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে তার সমাধানের একটি পথ পাওয়া গিয়েছে।’’