গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সিদ্ধান্ত হয়েছিল কয়েক বছর আগেই। এ বার তা কার্যকর করার পথে হাঁটলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ন’জন ভিভিআইপি আর ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ (সরকারি পরিভাষায় ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’ বা এনএসজি) কমান্ডো বাহিনীর নিরাপত্তা পাবেন না। এনএসজির পরিবর্তে সিআরপিএফের বিশেষ দল আগামী মাস থেকে ওই ন’জন ভিভিআইপির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে।
এনএসজি প্রত্যাহারের তালিকায় রয়েছেন, প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী এলকে আডবাণী, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিএসপি সভানেত্রী মায়াবতী, জম্মু ও কাশ্মীরের শাসকদল ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলত্যাগী কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ।
প্রসঙ্গত, দেশের ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে এনএসজিকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে বছর চারেক আগে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শাহের মন্ত্রক জানিয়েছিল, ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ কমান্ডোদের পুরোপুরি জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী অপারেশনে ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ। ভিভিআইপি নিরাপত্তার বিষয়টি সামলানোর জন্য ইতিমধ্যেই সিআরপিএফের ‘ভিআইপি সিকিউরিটি উইং’-এর একটি ব্যাটালিয়ন গড়া হয়েছে বলে নর্থ ব্লক সূত্রের খবর। নয়জন ভিআইপির মধ্যে দু'জনের (রাজনাথ এবং সোনোয়াল) কাছে সিআরপিএফ-এর ‘উন্নত সুরক্ষা যোগাযোগ’ (এএসএল) প্রোটোকলও থাকবে। যা রয়েছে শাহ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য— সনিয়া, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার।
প্রসঙ্গত, প্রায় তিন দশক ধরে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলেছেন ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ কমান্ডোরা। ১৯৮৪ সালে যখন এই বাহিনীর কথা ভাবা হয়েছিল, তখন অবশ্য ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য এনএসজিকে ব্যবহার করা হয়নি। পরে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় এনএসজিকে। ‘প্রাণনাশের ঝুঁকিতে থাকা’ নেতাদের রক্ষার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের গড়া হয় এনএসজির ‘স্পেশাল রেঞ্জার গ্রুপ’। অন্য দিকে, সন্ত্রাসদমন, বিমান ছিনতাই মোকাবিলা এবং ঝটিকা হানাদারির জন্য সেনার কমান্ডোদের নিয়ে এনএসজি গড়েছিল ‘স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ’। ঘটনাচক্রে, বুধবারই এনএসজির ৪০ বছর পূর্তির দিন।