ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
স্বামী-স্ত্রী যখন বিয়ে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, একে অপরের প্রতি মনোভাব বিদ্বেষে জর্জরিত, সেই সময়ে তাঁদের নির্দেশ দিয়ে একসঙ্গে থাকতে বাধ্য করা নিষ্ঠুরতার শামিল বলে রায় দিয়েছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। স্বামীর বিচ্ছেদের আবেদনও মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি সৌমিত্র দয়াল সিংহ এবং অরুণ কুমার সিংহ দেশোয়াল।
বিচারপতিরা রায়ে বলেছেন, “স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই একে অপরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছেন। সম্পত্তি নিয়ে বাদী ও বিবাদীর মধ্যে গুরুতর বিরোধ রয়েছে। সেই সঙ্গে, দু’জনেরই অভিযোগ— অন্য জন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত। পারস্পরিক ঘৃণা পোষণকারী কোনও দম্পতিকে তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একসঙ্গে থাকতে নির্দেশ
দেওয়া নিষ্ঠুরতা।”
২০০২-এ বিয়ের পরে স্বামী অশোক ঝা পারিবারিক আদালতে বিচ্ছেদের মামলা করলে স্ত্রী প্রতিভা ঝায়ের অনুপস্থিতিতে তার অনুমোদন পান ২০১৯ সালে। কিন্তু তার পরে প্রতিভা সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করলে পারিবারিক আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে দু’জনকে এক সঙ্গে থাকতে বলে মামলা খারিজ করে দেয়। এর পরে অশোক হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বলেন, স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি মামলা করেছিলেন, প্রমাণের অভাবে তা থেকে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এর পরে তাঁর পক্ষে আর এই বিবাহ টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
বিচারপতিরা শুনানিতে স্বামী ও স্ত্রীর বক্তব্য শোনেন। একে অপরের বিরুদ্ধে তাঁরা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ আনেন। এক জনের সম্পত্তি অন্য জন বেআইনি ভাবে ভোগদখল করার নালিশও করেন। দু’পক্ষই অন্যের বিরুদ্ধে নানা ফৌজদারি মামলাও করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিচারপতিরা বিবাহে ইতি টানার নির্দেশ দিয়ে পারিবারিক আদালতের নির্দেশকে সমালোচনা করেন। একই সঙ্গে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছেন, খোরপোশ হিসাবে এককালীন এক কোটি টাকা তাঁকে এখনই দিতে হবে। দেরি করলে বাৎসরিক ছ’শতাংশ হারে সুদ গুনতে হবে বলে জানানো হয়েছে।