শিলংয়ে মোদী। পিটিআই
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দিন শিলংয়ের রং নীল-সাদা করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিশ্বকাপ ফাইনালের দিনে শিলংয়ে হাজির হয়ে নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করলেন, অচিরেই ভারতও ফিফা বিশ্বকাপের মতোই প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে, যেখানে ফ্রান্স বা আর্জেন্টিনা নয়, ভারতের জন্য তেরঙা হাতে সমর্থন জানাতে পারবেন দেশবাসী।
গুজরাত ধরে রাখতে পারলেও হাতছাড়া হয়েছে হিমাচল ও দিল্লি পুরসভা। বিজেপি মরিয়া ত্রিপুরা হাতে রাখতে এবং মেঘালয়ে সরকার গড়তে। সেই লক্ষ্যেই রবিবার দুই রাজ্য সফরে এসে ৬৮০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস সেরে ফেললেন মোদী।
মেঘালয়ে বিজেপির সামনে লড়াই দ্বিমুখী। এক দিকে আছে প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল। অন্য দিকে বর্তমান জোট শরিক এনপিপি। দুই দলেরই ঘর ভাঙাতে শুরু করেছে বিজেপি। দাবি করছে, পরের সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তাদের দল থেকেই। এ হেন প্রেক্ষাপটে, আজ ভোট প্রচারের মাঠে খেলা শুরুর বাঁশি বাজিয়ে দিলেন মোদী। বিশ্বকাপ ফাইনালের দিনে ভাষণে কেন্দ্রের কৃতিত্বগাথা তুলে ধরতে মোদী ফুটবল মাঠকেই বেছে নিয়েছিলেন রূপক হিসেবে।
উত্তর-পূর্ব পরিষদের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব ও ২৪৫০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জোড়া সভায় ভাষণ দেন মোদী। তিনি বলেন, “কাকতালীয় ভাবে এমনই এক দিনে ফুটবলপ্রেমী জনতার মধ্যে, ফুটবল স্টেডিয়ামে ভাষণ দিচ্ছি, যেদিন সকলের মন পড়ে রয়েছে কাতারের ফুটবল মাঠে। তাই রাজনীতির ভাষা নয় ফুটবল জ্বরের দিনে ফুটবলের ভাষাতেই কথা হবে।”
তাঁর কথায়, “ফুটবল মাঠে ফাউল করলে যেমন লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করা হয়, তেমনই ২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের সরকার দুর্নীতি, জনজাতি বিভাজন, স্বজনপোষণ, হিংসা, ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি, প্রকল্প রূপায়ণে অযথা বিলম্বের মতো পুরনো অসুখগুলোকে লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দিয়েছে। মণিপুরে তৈরি হয়েছে দেশের প্রথম ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়। আরও ৯০টি ক্রীড়াক্ষেত্র নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর ভরসাবাক্য, “আমরা সকলে কাতারে দু’টি বিদেশি দলের হয়ে গলা ফাটাচ্ছি আজ, কিন্তু সে দিন দূরে নয় যখন ভারতেই বিশ্বকাপের মতো আসর বসবে আর আমরা নিজের দেশের হয়ে, নিজেদের জাতীয় পতাকা নিয়ে গলা ফাটাব।”
অন্য দিকে ত্রিপুরায় ৪৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করেন মোদী। ত্রিপুরার পাহাড়ে বিজেপির অবস্থা খুবই নড়বড়ে। তাই আগরতলার জনসভায় জনজাতিদের মন জয়েই বেশি মন দেন মোদী। বলেন, জনজাতি উন্নয়ন বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। অবশ্য ভাষণ শুরু করেন বাংলায়। বলেন, “ত্রিপুরাসুন্দরী মায়ের পুণ্যভূমিতে এসে নিজেকে ধন্য মনে করছি।”