Union Budget 2024

শহরে সাধ্যের আবাসন বিক্রি বাড়াতে চায় কেন্দ্র

মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় শহরাঞ্চলে আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি বাড়ি তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন। এতে মূলত শহরাঞ্চলের গরিব এবং মধ্যবিত্তদের উপকার হবে।

Advertisement

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৭:১৪
Share:

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবিঃ পিটিআই।

Advertisement

প্রথমে কোভিড এবং তার পরে চড়া মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা বহু সাধারণ রোজগেরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে তলানিতে টেনে নামিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে নিজস্ব আস্তানার সাধ। তাই সাধ্যের আবাসনের (কম দামি) বিক্রিবাটাও ধাক্কা খেয়েছে। এ বার তাতেই জ্বালানি জোগাতে কোমর বাঁধল কেন্দ্র। তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় আরও বেশি বাড়ি তৈরিতে জোর দিয়ে সাধ্যের আবাসন ক্ষেত্রের প্রসারে আলাদা করে নজর দিলেন। মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় শহরাঞ্চলে আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি বাড়ি তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন। এতে মূলত শহরাঞ্চলের গরিব এবং মধ্যবিত্তদের উপকার হবে। উপকৃত হবে আবাসন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বাকিরাও। নির্মলা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (শহর) আওতায় আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি বাড়ি তৈরি করা হবে। সরকার ২.২ লক্ষ কোটি টাকা দেবে। মোট প্রকল্পের খরচ পৌঁছবে ১০ লক্ষ কোটি টাকায়। যা সাধ্যের আবাসন ক্ষেত্রের বৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।’’ কেন্দ্রের এই ঘোষণায় খুশি আবাসন ক্ষেত্র। ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গলের সভাপতি তথা মার্লিন গোষ্ঠীর কর্ণধার সুশীল মোহতা বলেন, ‘‘২০২৫-এর মধ্যে আবাসন ক্ষেত্রের অংশীদারি মোট জিডিপির ১৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সেই লক্ষ্যে এগোনোর পথে অনেকটাই গতি আনবে। শহরাঞ্চলে এক কোটি কম দামি বাড়ি তৈরির ঘোষণা যেমন মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফোটাবে, তেমনই আমাদের মতো সংস্থাদের জন্যও খুশির খবর।’’ ক্রেডাই বেঙ্গলের সভাপতি সিদ্ধার্থ পানসারির মতে, ‘‘বাজেটে গ্রামীণ এলাকার চেয়েও শহরাঞ্চলের উপরে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আবাসন ক্ষেত্রের পাশাপাশি সিমেন্ট, স্টিল-সহ বহু ক্ষেত্র উপকৃত হবে। তাতে আখেরে চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি।’’

পাশাপাশি রাজ্যগুলির কাছে তাঁর প্রস্তাব, আবাসন ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটির হার কিছুটা কমানো হোক। বস্তুত, মহিলারা সম্পত্তি কিনলে, সেই ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটি আরও কিছুটা কমানোর প্রস্তাব এ দিনের বাজেটেও দেওয়া হয়েছে। একাংশ বলছেন, কম দামি ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রিই আবাসন সংস্থাকে চাঙ্গা করে রেখেছে বহু দিন ধরে। এখন সেই বাজারে ভাটা। বিলাসবহুলগুলির বিক্রি বেড়েছে। সার্বিক ভাবে আবাসন শিল্পকে ধারাবাহিক ভাবে চাঙ্গা করে রাখতে কিন্তু কম দামিগুলিরও বিক্রি বৃদ্ধি জরুরি। আবাসন সংস্থা রেমন্ড গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ‘‘সাধ্যের বাড়ি তৈরি বাড়লে শহরাঞ্চলেও আবাসন ক্ষেত্রের হাল ফিরবে। একই সঙ্গে সাধ্যের মধ্যে আবাসন ক্ষেত্রের চেহারাটা একেবারে বদলে যাবে। মহিলাদের জন্য করের ক্ষেত্রে বেশি ছাড় হলে স্বাভাবিক ভাবেই শহরাঞ্চলে এর বড় প্রভাব পড়বে।’’ বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের সভাপতি নমিত বাজোরিয়া সাধ্যের আবাসনে জোর দেওয়ার প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। এ দিনের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী সারা দেশে ৩০ লক্ষের বেশি জনসংখ্যার ১৪টি শহরের ভবিষ্যৎমুখী উন্নয়নের পরিকল্পনা কথা ঘোষণা করেছেন। এর ফলে এই শহরগুলিতে আবাসন, রাস্তাঘাট, পানীয় জল-সহ বিবিধ ক্ষেত্রের একলাফে অনেকটাই উন্নতি হবে। মূলত দেশের তৃতীয় ও চতুর্থ সারির শহরগুলিকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হতে পারে। সর্বভারতীয় বণিকসভা সিআইআই-এর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সহ সভাপতি শাশ্বত গোয়েঙ্কা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘‘এর ফলে দেশের নগরায়ন প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হারে হবে। এই সিদ্ধান্ত দেশের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে নেওয়া বলেই আমার মত।’’ তাঁর আশা, এই সিদ্ধান্তের ফলে পূর্বভারতের একাধিক শহরের সামগ্রিক বৃদ্ধির গতি অনেকটাই বাড়বে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement