তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। —ফাইল ছবি।
বাজেট নিয়ে আলোচনায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে ‘প্রশিক্ষিত অর্থনীতিবিদ নন’ বলে বিঁধেছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। আরও বলেছিলেন, মনমোহন সিংহের মতো অক্সফোর্ডের পিএইচডি বা পি চিদম্বরমের মতো হার্ভার্ডের ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রিধারী নন বর্তমান অর্থমন্ত্রী। আজ বাজেট নিয়ে জবাবি বক্তৃতায় সৌগতকে তীব্র আক্রমণ শানালেন নির্মলা। দমদমেরসাংসদকে ‘উগ্র পুরুষবাদী’ বলতেও ছাড়েননি তিনি।
নির্মলার কথায়, “বাংলার যে মাটি আমাদের বন্দেমাতরম দিয়েছে, আজ সেখান থেকে অধ্যাপক সৌগত রায়কে পাচ্ছি আমরা! যিনি মন্তব্য করেছেন আমার চিন্তার দৈন্য রয়েছে কারণ আমি এখানকার জেএনইউ থেকে পড়েছি, মনমোহন সিংহের মতো অক্সফোর্ড থেকে বা চিদম্বরমের মতো হার্ভার্ড থেকে নয়। অবশ্যই আমি মনমোহন সিংহের মতো হতে চাই না।” এরপরই তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ তোলেন। নির্মলার কথায়, “বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনো করেছেন। জিএসটি কাউন্সিলে তাঁর অবদান দুর্দান্ত। তাঁরও কি চিন্তার দৈন্য রয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত কলেজে পড়াশোনো করেছেন। তিনি একজন লড়াকু নেত্রী বহু বছর ধরে রাজ্যকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং আমি যাঁরা ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি তারা কোন দিক থেকে অক্সফোর্ড বা হার্ভাডের তুলনায় কম? সৌগত রায় কি বলতে চাইছেন ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা পড়াশোনা করেন তাঁদের চিন্তার দৈন্য রয়েছে।’’ এর পরেই সৌগতকে অর্থমন্ত্রীর জোরালো আক্রমণ, ‘‘উগ্র পুরুষবাদী এই অধ্যাপক, যিনি মহিলাদের আক্রমণ করে থাকেন তাঁকে এই প্রশ্ন করতে চাই। নিজে এক জন ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়ে, ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাঁরা ডিগ্রি পেয়েছে, তাঁদের অপমান করছেন? আপনার তো লজ্জা হওয়া উচিত।”
সৌগত বলেছিলেন, বাংলায় ব্রিটিশ জমানার থেকেও এখন আর্থিক বৈষম্য বেশি। সীতারামানের কথায়, “ব্রিটিশ জমানায় বাংলার মানুষ খেতে পেতেন না। বাংলার সব সম্পদ কাজে লাগানো হত যুদ্ধের জন্য। তখনকার ছবি দেখলে বোঝা যায় হাড্ডিসার তখন বাংলার মানুষের চেহারা। সেই বাংলা আজকের চেয়ে ভাল অত্যন্ত লজ্জাজনক এই মন্তব্য।”
সৌগত পরে এই নিয়ে বলেন, “কোনও ব্যক্তি আক্রমণ করিনি। বলতে চেয়েছিলাম যে ভারতের মতো এত বড় অর্থনীতিকে চালানো একজন অর্থনীতিবিদ নন এমন ব্যক্তির পক্ষে খুবই মুশকিল। কিন্তু উনি ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসাবে বিষয়টিকে নিয়েছেন। এই নিয়ে আর কী বলব।” তাঁর মতে, “দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ভাল নয় বলেই তো এত লোক বিদেশ যাচ্ছেন পড়তে।”