১। টাকা তোলার লাইন এটিএমে ২। নোট শেষ ৩। বাতিল নোট বদলাতে না-পেরে আত্মহত্যার হুমকি ৪। নতুন ২০০০ টাকা হাতে ফাইল চিত্র।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পাঁচ বছর পূর্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করলেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা বঢরা থেকে শিবসেনা, বাম নেতৃত্ব— সরব অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে মোদীর প্রতিশ্রুত কালো টাকা ফেরানো এবং দুর্নীতি রোধ নিয়েও।
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মোদী সরকারকে আক্রমণ করার পাশাপাশি খোঁচা দিয়েছেন সনিয়া গাঁধীর দলকেও। সামনেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। আগামী ১৪ তারিখ থেকে দেশজুড়ে পক্ষকালের কেন্দ্র-বিরোধী অভিযান শুরু করতে চলেছে কংগ্রেস। কেন্দ্রের অর্থনৈতিক বেহাল নীতিকে তুলে ধরা এই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে নোট বাতিলের মতো বিষয়কে ফের তুলে ধরার কৌশল নিয়েছে বিরোধী শিবির।
সকালেই প্রিয়ঙ্কা টুইট করে মোদী সরকারকে নিশানা করে লেখেন, “নোট বাতিলের নীতি যদি সফলই হবে, তা হলে দুর্নীতি কেন শেষ হচ্ছে না? কালো টাকা কেন ফেরত এল না? কেন সন্ত্রাসবাদ এখনও চলছে? মুদ্রাস্ফীতিকে কেন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না?” রাহুল গাঁধী টুইটারে লেখেন, ‘ভুল হলে মানুষ ক্ষমা করে দেন। কিন্তু জেনেবুঝে, বন্ধুদের স্বার্থে করা এই চালের কোনও ক্ষমা নেই।’ কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর লেখেন, ‘মূর্খের মতো, খামখেয়ালি, চিন্তাশূন্য, মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ের পর ভারত সরকারের সবচেয়ে খারাপ ভাবে বাস্তবায়িত একটি নীতির, পাঁচ বছর পূর্তিতে আমরা নতমস্তকে তাঁদের স্মরণ করি, যাঁরা ওই সিদ্ধান্তের ভুক্তভোগী।”
কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরি বলেন, “নোট বাতিল যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, সেটা ব্যর্থ। কেন্দ্র দাবি করেছিল, তারা নকল নোট ছাপানো বন্ধ করবে, সন্ত্রাসমূলক কাজকর্ম বন্ধ করবে এবং ভারতবর্ষের মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনে নিয়ে যাবে। কিন্তু দেখা গেল, নোট বাতিল হলেও সে দিন ভারতবর্ষের বাজারে নগদ ছিল ১৭ লক্ষ কোটি টাকা। আজ পাঁচ বছর পরে ভারতের বাজারে নগদের পরিমাণ ২৬ লক্ষ কোটি টাকা।’’
শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য নোট বাতিলকে দায়ী করে বলেন, “দেশবাসীকে সখেদে বলছি, নোট বাতিলের অর্থ অর্থনৈতিক মন্দা। নোট বাতিল ছিল সংগঠিত লুঠ, আইনি অত্যাচার।” সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “নোট বাতিলের ফলে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্র বড় ধাক্কা খেয়েছে। অর্থনীতি বেহাল। সবচেয়ে যাঁরা দরিদ্র, তাঁরা সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। কোনও কালো টাকাই ফেরানো যায়নি, কিন্তু ধনী আরও ধনবান হয়েছে।”
তৃণমূলও নোটবাতিলের সমালোচনা করেছে। কিন্তু শুধু বিজেপি বা মোদী নয়, প্রচ্ছন্ন ভাবে কংগ্রেসকেও খোঁচা মেরেছে তারা। ডেরেকের টুইট, “২০১৬-র ৮ নভেম্বর রাতে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরপর পাঁচটি টুইট করে এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন।” ডেরেকের বক্তব্য, মমতার ডাকে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা, শিবসেনা এবং তৃণমূলের অন্য সাংসদরা ২০১৬-র ১৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে মোদী সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সে সময় কংগ্রেস বাজারে নামেনি।