আইআইএম কলকাতার প্রথম মহিলা ডিরেক্টর অঞ্জু শেঠ। ছবি: সংগৃহীত।
‘ক্ষমতা ছাঁটাই’য়ের মাসখানেকের মধ্যেই ইস্তফা দিলেন আইআইএম কলকাতার প্রথম মহিলা ডিরেক্টর অঞ্জু শেঠ। সম্প্রতি অসুস্থতাজনিত কারণে ২ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন অঞ্জু। তার পর ইস্তফা দেন তিনি। অঞ্জুর কার্মজীবনের প্রায় ১ বছর বাকি ছিল। কিন্তু অবসরের আগেই সরে দাঁড়ালেন তিনি। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন বোর্ডের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের কারণেই কি এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি, উঠছে প্রশ্ন।
কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-এর পরিচালন বোর্ডের সঙ্গে অঞ্জুর দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল গত বছর। অঞ্জুর দাবি, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শ্রীকৃষ্ণ কুলকার্নি তাঁর সিদ্ধান্তে ‘হস্তক্ষেপ’ করছেন। অন্য দিকে, অঞ্জুর বিরুদ্ধে ‘অনুচিত আচরণ’ করার পাল্টা দাবি করেছে বোর্ড। গত ডিসেম্বরে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৫ শতাংশ শিক্ষ অঞ্জুর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের দ্বারস্থ হন। মন্ত্রকের উদ্দেশে একটি চিঠিতে তাঁদের অভিযোগ ছিল, সমস্ত ক্ষমতা ‘কুক্ষিগত’ করে রেখেছেন অঞ্জু। এমনকি, বোর্ড তথা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়েও ‘হস্তক্ষেপ’ করছেন তিনি। তার পর থেকে দু’পক্ষই পরস্পরকে উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছে।
সূত্রের খবর, চলতি মাসের ৪ তারিখে দু’পক্ষই দ্বন্দ্বের ফলে প্রতিষ্ঠানের ‘সঙ্কট’ বাড়ে। অঞ্জুর বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাশ করে তাঁর ক্ষমতা ছাঁটাই করা হয়। অঞ্জুর কাছ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেয় বোর্ড।
২০১৮ সালের নভেম্বরে আইআইএমের ডিরেক্টর পদে কাজ শুরু করেছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের ’৭৮ ব্যাচের ছাত্রী অঞ্জু। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অঞ্জুর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হবে। তবে তার আগেই সরে গেলেন তিনি। সে হতাশা গোপন করেননি অঞ্জু। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে তিনি বলেন, ‘‘একটা স্বপ্ন আংশিক পূরণ করেই চলে যাচ্ছি, তাতে আমি হতাশ। এমনটা যে হবে, তা চাইনি। তবুও আমি গর্বিত যে আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে আইআইএম কলকাতার যে চিরাচরিত বাধাগুলি ছিল, তা ভেঙে দিতে চেয়েছি।’’ ভবিষ্যতেও এই প্রতিষ্ঠান তার মূল্যবোধ এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন অঞ্জু।