কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। — ফাইল ছবি।
এ বার কি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতকে গ্রেফতার করবে রাজস্থান পুলিশ? সম্প্রতি বিজেপির একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতকে ‘রাজনীতির রাবণ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন শেখাওয়াত। শনিবার রাজস্থানের এক প্রাক্তন বিধায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র সিংহ জাদাওয়াত চিতোরগড় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা হলে কি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজস্থানের বিজেপি নেতা শেখাওয়াতকে গ্রেফতার করবে গহলৌতের পুলিশ?
গত ২৭ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার রাজস্থান বিজেপির আয়োজিত একটি জনসভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে হাজির ছিলেন শেখাওয়াত। অভিযোগ, সেখানেই তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ‘অপশব্দ’ প্রয়োগ করেন। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করেন কংগ্রেস নেতা। শনিবার রাতে জাদাওয়াত বলেন, ‘‘রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলায় আমি এই মাত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে এলাম। তিনি ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। এটা আমাদের আটকাতে হবে।’’
গত বৃহস্পতিবার বিজেপির জন আক্রোশ র্যালিতে হাজির হয়ে শেখাওয়াত বলেছিলেন, ‘‘যদি আপনারা রাজস্থানে রাজনীতির রাবণ অশোক গহলৌতের অপশাসনের অবসান চান তাহলে হাত তুলুন এবং রামরাজ্য স্থাপনের অঙ্গীকার করুন।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই শব্দবন্ধ নিয়েই যত আপত্তি কংগ্রেসের। রাজস্থানের শাসকদল মনে করছে, মানুষকে ধর্মীয় হানাহানিতে উস্কানি দিতেই এই ধরনের মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এতে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সমগ্র রাজস্থানেরও অপমান হয়েছে বলেও এফআইআরে দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শেখাওয়াতের সঙ্গে গহলৌতের দ্বৈরথ নতুন নয়। সঞ্জীবনী ক্রেডিট কোঅপারেটিভ সোসাইটি কেলেঙ্কারিতে শেখাওয়াত জড়িত বলে কিছু দিন আগেই প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর দিল্লির একটি আদালতে গহলৌতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন শেখাওয়াত। সঞ্জীবনী ক্রেডিট কোঅপারেটিভ সোসাইটিতে হওয়ার বিপুল দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে রাজস্থান পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, সঞ্জীবনী ক্রেডিট কোঅপারেটিভ সোসাইটির ফাঁদে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এই মামলায় অবশ্য শেখাওয়াত রাজস্থান হাই কোর্টের যোধপুর বেঞ্চ থেকে রক্ষাকবচ আদায় করেছেন। কিন্তু কুমন্তব্যের মামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও স্থগিতাদেশ আসেনি।
তাঁকে রাজনীতির রাবণ বলে আক্রমণকে অবশ্য প্রকাশ্যে বেশি গুরুত্ব দেননি মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত। তিনি কেবল বলেছেন, ‘‘যদি আমি রাবণ হই, তা হলে আপনি (শেখাওয়াত) রাম হয়ে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দিন।’’