ছবি সংগৃহীত।
মাদার টেরিজা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ় অব চ্যারিটির একটি শাখার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরণের অভিযোগ উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে। গুজরাতের বডোদরা শহরে ওই সংগঠনের একটি হোম রয়েছে। অভিযোগ, ধর্মান্তরণ ছাড়াও হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয় এমন কাজও ওই হোমে হয়ে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠনটি। তাদের দাবি, ওই হোমে কোনও ভাবেই জোর করে কারও ধর্মান্তরণ করা হয়নি। কলকাতায় মাদার হাউসে যোগাযোগ করা হলে, তাদের আধিকারিক সিস্টার ব্লেসিলার তরফে আজ জানানো হয়, এ নিয়ে তাঁরা এখনই কিছু বলতে চান না।
জেলা সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক ময়ঙ্ক ত্রিবেদীর অভিযোগ, ওই হোমে হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে এবং হোমের অল্পবয়সি মেয়েদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়ে থাকে। গুজরাতের ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন, ২০০৩-এর আওতায় গত রবিবার মকরপুরা থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন ময়ঙ্ক। তাঁর বক্তব্য, গত ৯ ডিসেম্বর জেলার শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওই হোমে গিয়েছিলেন তিনি। এফআইআরে তিনি বলেছেন, সেখানে তিনি দেখেছেন, হোমের মেয়েদের জোর করে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ানো হয়, তাদের গলায় ক্রস পরতে বলা হয় এবং তাদের খ্রিস্টানদের প্রার্থনায় অংশ নিতেও বলা হয়। ময়ঙ্কের আরও অভিযোগ, হিন্দু মেয়েদের আমিষ খাবারও খেতে দেওয়া হয় ওই হোমে। তাঁর বক্তব্য, এ ভাবেই প্রকারান্তরে মিশনারিজ় অব চ্যারিটি কর্তৃপক্ষ হোমের মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরণের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। ময়ঙ্ক জানিয়েছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সংগঠন নিয়মিত হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। পুলিশ ময়ঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
মিশনারিজ় অব চ্যারিটি কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘কোনও ধর্মান্তরণ প্রক্রিয়ায় আমরা অংশ নিই না। আমাদের ওই হোমে ২৪ জন মেয়ে রয়েছে। আমরা যে ভাবে থাকি বা প্রার্থনা করি, ওরাও
সেটাই করে থাকে। জোর করে
কারওর ধর্ম পরিবর্তন আমরা করিনি বা কাউকে জোর করে ভিন্ ধর্মে বিয়েও দেওয়া হয়নি।’’ পঞ্জাবের এক তরুণীকে জোর করে এক খ্রিস্টান যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ওই হোমের বিরুদ্ধে। বডোদরার পুলিশ কমিশনার সমশের সিংহ জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আলাদা করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শিশু কল্যাণ কমিটির তরফে অভিযোগ আসার পরে জেলাশাসক একটি কমিটি তৈরি করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার এসবি কুমাবত জানিয়েছেন, বিভিন্ন দফতরের একাধিক সদস্য অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখেন। তার ভিত্তিতেই অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। কুমাবতের দাবি, ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ এ বার খতিয়ে দেখা হবে।