মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। —ফাইল চিত্র
গত বছরই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নিয়েছে আমেরিকা। এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরে অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠতে চলেছে সেই বিষয়। সেই বিশেষ মর্যাদা ফেরত নিয়ে দৌত্য না করলেও বিশেষ কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ট্যারিফ কমানোর আর্জি জানাতে চলেছে ভারত। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন কথা চালাচালির সঙ্গে যুক্ত কূটনীতিকদের সূত্রে তেমনটাই খবর। পাশাপাশি ভারতের দুগ্ধ বাজারে আমেরিকাকে কিছুটা প্রবেশাধিকার দেওয়া হতে পারে। তবে ট্রাম্পের সফরে বড় কোনও বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে দু'দেশের কূটনৈতিক মহল।
১০ দিন পরেই প্রথম বারের জন্য ভারতে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু'দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুডরাত সফর ছাড়াও নয়াদিল্লিতে একাধিক বৈঠক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পর তাঁকে স্বাগত জানাতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাগত অনুষ্ঠানের থেকেও সেই অনুষ্ঠান আরও বড় হতে চলেছে।
কিন্তু সেই আনুষ্ঠানিকতার চেয়েও নয়াদিল্লির কাছে বড় হয়ে উঠেছে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপড়েনে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেওয়া। সেই উদ্দেশেই আমেরিকা থেকে চিকেন লেগ ও টার্কি আমদানির প্রস্তাব নয়াদিল্লি দিতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, দুই ক্ষেত্রেই ট্যারিফ ১০০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে আনার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এ ছাড়া হার্লে ডেভিসনের মতো বড় বাইক আমদানির উপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাবও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-পথে বস্তি ঢাকতে ছ’ফুটের প্রাচীর
আরও পড়ুন: ‘ক্ষতি হয়তো কুকথাতেও’, দিল্লি হারের ব্যাখ্যায় অমিত
আবার ভারতের দুধের বাজারে আমেরিকার প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদনকারী দেশ। দেশের প্রায় ৮ কোটি মানুষের জীবন জীবিকা এই পেশার উপর নির্ভরশীল। সেই বিপুল সংখ্যক মানুষের কথা মাথায় রেখেই এত দিন পর্যন্ত দুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রী রফতানির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি রেখেছিল ভারত সরকার। কিন্তু এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরে আমেরিকার জন্য সেই রফতানির দরজা খুলে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: এক দিনে রেকর্ড মৃত্যু চিনে
১৯৭০ সাল থেকে ভারত আমেরিকা থেকে পণ্য আমদানিতে বিশেষ সুবিধা পেত। কিন্তু ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের সেই বিশেষ বাণিজ্য বন্ধুর তকমা বাতিল করে দে্ন। পাশাপাশি, হৃদরোগে ব্যবহৃত স্টেন্টের মতো বেশ কিছু চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় ভারতও আমেরিকার আমদানির উপর অনেকগুলি ক্ষেত্রে শুল্ক অত্যধিক হারে বাড়িয়ে দেয়। তার জেরে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়। ট্রাম্পের সফরে ভারত সেই সব জটিলতা কিছুটা কাটাতে চাইলেও বড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই বিদেশ ও বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর। পাশাপাশি ট্রাম্পের এই সফরে নতুন বড় কোনও বাণিজ্য চুক্তিও হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছেন দু'দেশের কূটনীতিকরা।