Myanmar Refugees

অনুপ্রবেশ-মন্তব্যের ‘জবাব’, চিন্তা শিশুরা

কুকি মন্ত্রী লেটকাও হাওকিপের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সাব-কমিটি তদন্ত করে দেখেছে, সরকার তাঁদের চিহ্নিত করে ত্রাণ শিবির গড়ে দিলেও তাঁরা শিবিরে না থেকে অবৈধ ভাবে গ্রাম তৈরি করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:২৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মণিপুর থেকে মায়ানমারের ৭৭ জন নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো ও অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গে মণিপুর সরকারের অবস্থান নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস (আইসিজে) যে সমালোচনা করেছিল, তার জবাবে মণিপুরের সামাজিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ চিঠি দিয়ে দাবি করল, ওই ৭৭ জনকে জোর করে দেশে পাঠানো হয়নি। তাঁদের গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বেচ্ছায় তাঁরা দেশে ফিরেছেন।

Advertisement

চিঠিতে এ-ও বলা হয়েছে, ২০২১ সাল থেকে মায়ানমারের অনুপ্রবেশকারীরা রাজ্যে ঢুকছেন। কুকি মন্ত্রী লেটকাও হাওকিপের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সাব-কমিটি তদন্ত করে দেখেছে, সরকার তাঁদের চিহ্নিত করে ত্রাণ শিবির গড়ে দিলেও তাঁরা শিবিরে না থেকে অবৈধ ভাবে গ্রাম তৈরি করছেন। শুধু কামজং জেলাতেই ৫৪৫৭ জন অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৩২৯ জন স্বেচ্ছায় মায়ানমার ফিরে গিয়েছেন। কারও বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন অংশে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ভূমিপুত্রদের ছাপিয়ে যাচ্ছে। জনবিন্যাসে বদল আসছে। তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। যৌথ মঞ্চ মনে করিয়ে দেয়, পশ্চিমি দেশগুলিতেও শরণার্থীদের সমস্যা এমনই এবং সেখানেও কড়া হাতে তা দমন করা হচ্ছে। আইসিজে যেন ভবিষ্যতে প্রকৃত তথ্য জেনে বিবৃতি দেয়।

মণিপুরে প্রায় ২৫ হাজার বাচ্চা ত্রাণ শিবিরে আছে। শিবির থেকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে নাবালক-নাবালিকাদের ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানোর ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মণিপুর শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিটি অভিভাবকদের ও সামাজিক সংগঠনগুলির কাছে অনুরোধ করল, এ ভাবে কোনও প্রলোভনে পা দিয়ে শিশু-পাচারকারীদের হাতে যেন বাচ্চা তুলে না দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে এমন প্রায় ৫০ জনকে ভিন্‌‌ রাজ্য থেকে মণিপুরে ফেরানো হয়েছে। রাজ্যে ফিরিয়ে আনা শিশুদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের উপরে যৌন নির্যাতন, মারধরের প্রমাণ মিলেছে। কমিটির চেয়ারপার্সন কেইশেমপাত প্রদীপকুমার জানান, সংঘর্ষের মধ্যে মারা গিয়েছে ১৫ জন শিশু। নিখোঁজ শিশুর সংখ্যা ২৮। শিবিরবাসী শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় সকলেই। কিন্তু কয়েকটি সংগঠন বেআইনি ভাবে, বাবা-মায়েদের ভুল বুঝিয়ে মূলত ১২ বছরের কম বয়সি ছেলেমেয়েদের অন্যায় ভাবে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে। বিনামূল্যে শিক্ষার লোভ দেখিয়ে শিশুদের পাচার করা হতে পারে। তাই প্রশাসনকে না জানিয়ে কোনও শিশুকে বাইরে পাঠানো যাবে না।

Advertisement

এ দিকে, বাংলাদেশ থেকে ‘বাওন’ নামে চিন-মিজ়ো গোষ্ঠীর একটি শাখার ১২৭ জন গ্রামবাসী পালিয়ে মিজ়োরামের লাওঙ্গৎলাই জেলার চামদুর পি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশে সেনা ও কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের জেরে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৩৬৮ জন সীমান্ত পার করে মিজ়োরামে আশ্রয় নিলেন। আবার মায়ানমার থেকে মিজ়োরামে আরও ৯৫ জন শরণার্থী প্রবেশ করায় রাজ্যে বর্মি শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সরকারি হিসাবে ৩৪,৩৪৬ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement