প্রতীকী চিত্র।
মারণ রোগের রক্তচক্ষুর তাড়া খেয়ে বাড়ি ফেরার জন্য রেললাইন ধরে টানা তিন দিন হেঁটে দেওঘর থেকে রামপুরহাটে পৌঁছেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের ছয় পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু নিজেদের রাজ্যে এসেও তাঁদের ঝাড়খণ্ড সীমানায় ফিরে যেতে হল পুলিশের চোখরাঙানিতে। ঝড়জলের মধ্যে টানা দেড় দিন পথে কাটানোর পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানায় একটি স্থাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরে ঠাঁই হয় ওই ঘরমুখী শ্রমিকদের।
জয়নগরের ভাঙালিয়া থেকে টাইলস বসানোর কাজ করতে কয়েক মাস আগে দেওঘর গিয়েছিলেন বছর তিরিশের রউফ মোল্লা এবং তাঁর পাঁচ সহযোগী। মাসখানেক আগে কাজ বন্ধ হয়ে গেলেও রসদের উপরে ভরসা করে লকডাউন কাটানো যাবে ভেবে থেকে অস্থায়ী ডেরায় থেকে যান তাঁরা। কিন্তু ট্যাঁকে টান পড়তে শুরু করায় মরিয়া হয়ে ৪ এপ্রিল বাড়ির পথ ধরেন তাঁরা। টানা তিন দিনে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার হেঁটে বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট স্টেশনে পৌঁছন। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের পরামর্শে পুলিশে যোগাযোগ করেন। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা করার নামে পুলিশ তাঁদের ফের ঝাড়খণ্ড সীমানায় ছেড়ে দিয়ে আসে বলে অভিযোগ। পরে পরীক্ষা করে সকলকে করোনার লক্ষণহীন বলে শংসাপত্র দেওয়া হয়। তবু বঙ্গে ঢোকার অনুমতি মেলেনি বলে অভিযোগ। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে দেড় দিন দুই রাজ্যের সীমানায় পথেই থাকতে হয় তাঁদের। দীর্ঘ পথ হেঁটে তত ক্ষণে পায়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটের মাধ্যমে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিজেদের সমস্যার কথা জানান ওই শ্রমিকেরা। রাতে পুলিশ গিয়ে তাঁদের মুড়ি-চানাচুর দেয়। কিন্তু জানায়, ফেরার অনুমতি নেই। পরিস্থিতি বদলায় শুক্রবার দুপুরের পরে। ওই শ্রমিকদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয় প্রশাসন। সন্ধ্যায় ওই শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন স্থানীয় বিডিও এবং প্রশাসনিক কর্তারা। রামপুরহাট-১ ব্লকের বিডিও দীপান্বিতা বর্মণ জানান, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আরও কিছু শ্রমিককে এক জায়গায় এনে বাসে তাঁদের বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্লান্তিতে রেললাইনে ঘুম, অওরাঙ্গাবাদে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত ১৬ শ্রমিক
সংসদীয় কমিটির বৈঠক নিয়ে চাপ রাহুলেরও
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)