n প্রবল বৃষ্টিতে জলভাসি দিল্লির গাজ়িপুর। সেই জলেই প্রতিবাদ-অবস্থানে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। শনিবার। পিটিআই
সপ্তাহখানেকের অচলাবস্থার পরে অবশেষে কারনালে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিক্ষোভ থামল। গত ২৮ অগস্ট কারনালে কৃষকদের একটি বিক্ষোভ সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করতে বিক্ষোভকারীদের ‘মাথা ভেঙে দেওয়ার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন এসডিএম আয়ুষ সিনহা। সেই মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং ওই আমলার শাস্তির দাবিতে গত সপ্তাহ থেকে কারনালে বিক্ষোভে বসেন কৃষকেরা। আজ কৃষকদের চাপের মুখে মাথা নুইয়ে রাজ্যের বিজেপি সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, অভিযুক্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্তে রাজি তারা। একজন প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে ওই আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। তদন্ত চলাকালীন ওই এসডিএম-কে ছুটিতে পাঠানো হবে। কৃষক নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রশাসনের তরফে এই আশ্বাস মেলার পরেই কারনালের বিক্ষোভ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন সংযুক্ত কিসান মোর্চার নেতৃত্ব।
কারনালে বিক্ষোভরত কৃষকদের উপরে লাঠি চালিয়ে মাথা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন যে এসডিএম, শাস্তি দেওয়ার বদলে তাঁর পাশে দাঁড়ায় হরিয়ানার বিজেপি সরকার। তাঁর পদোন্নতিও ঘটানো হয়। এমনিতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন কৃষি আইন নিয়ে গত বছর নভেম্বর থেকে বিক্ষোভকারী কৃষকদের ক্ষোভ রয়েছে বিজেপির উপরে। তার উপর প্রশাসনের তরফে এসডিএম-এর পাশে দাঁড়ানো এবং পুলিশের বেপরোয়া লাঠি চালানোয় দুই কৃষকের মৃত্যু ও একাধিক বিক্ষোভকারীর আহত হওয়ার ঘটনায় আগুনে ঘি পড়ে। এই অবস্থায় দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে কিসান মহাপঞ্চায়েতে কৃষক নেতারা জানিয়ে দেন, ওই এসডিএম-এর শাস্তির দাবিতে তাঁরা কারনালে মিনি সেক্রেটারিয়েটের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন।
কৃষকদের বিক্ষোভ যাতে বড় আকার না নেয়, সে জন্য কারনাল ও লাগোয়া এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় মনোহরলাল খট্টরের সরকার। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনীও। কিন্তু বিক্ষোভে অনড় থাকেন কৃষকেরা। এর মধ্যে দফায় দফায় কৃষক নেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা চললেও তা ভেস্তে যায়। চড়া রোদের মধ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কৃষকদের সমস্যা বাড়াতে প্রশাসন গত কাল মিনি সেক্রেটারিয়েটের সামনের চত্বরে গাছের ডাল পর্যন্ত কেটে দেয়। তা নিয়ে নানা মহলের তীব্র সমালোচনাতেও নরম হয়নি রাজ্যের বিজেপি সরকার। অবশেষে আজ প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠন ও সেই কমিশনের রিপোর্ট পেশ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত এসডিএম-কে ছুটিতে পাঠানোর কথা ঘোষণা করে খট্টর সরকার। নিহত কৃষকের পরিবারের দু’জনকে চাকরি দেওয়ার কথাও জানায় সরকার। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের তরফে মৃতের পরিবারকে এককালীন আর্থিক সহায়তার দাবি নাকচ হয়েছে।
এ দিন বিক্ষোভ প্রত্যাহারের সময় কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত জানান, সরকার দাবি না মানলে তাঁরা সিঙ্ঘু ও টিকরি সীমানার মতো কারনালেও স্থায়ী মঞ্চ গড়ার কথা ভেবেছিলেন।