Farmers Protest

সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি নয়, আইন প্রত্যাহারের দাবিই জানাবেন কৃষকেরা

দিল্লি ঘেরাও করে গত সপ্তাহ থেকে কৃষক সংগঠনগুলির জাতীয় সড়ক অবরোধ কর্মসূচির জেরে এমনিতেই দিল্লির পাইকারি বাজারে আনাজের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪২
Share:

প্রতিবাদী: বুধবার দিল্লির সীমানায় এক বিক্ষোভকারী। রয়টার্স

সরকারের কথামতো কৃষি বিল নিয়ে আপত্তি লিখিত ভাবে জানানো হবে ঠিকই। কিন্তু তা নিয়ে কৃষক সংগঠনের নেতারা মোদী সরকারের সঙ্গে কোনও দর কষাকষিতে যাবেন না। আগামিকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে কৃষক সংগঠনের নেতারা দাবি জানাবেন, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হোক। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ আইনে সংশোধনী বিলও হিমঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।

Advertisement

আবার আগামিকালই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ দিল্লিতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পঞ্জাব সরকার কেন্দ্রের কৃষি আইন নাকচ করে বিধানসভায় বিল আনলেও এখনও তাতে সিলমোহর দেননি রাজ্যপাল। পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিংহ বাজওয়ার দাবি, রাজ্যগুলিকে নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কৃষি আইন রূপায়ণ না-করার অধিকার দেওয়া হোক।

এ দিকে, দিল্লি ঘেরাও করে গত সপ্তাহ থেকে কৃষক সংগঠনগুলির জাতীয় সড়ক অবরোধ কর্মসূচির জেরে এমনিতেই দিল্লির পাইকারি বাজারে আনাজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে ঢোকার একাধিক রাস্তায় অবরোধের জেরে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি চরমে। বুধবার নয়ডা থেকে দিল্লিতে ঢোকার একটি সীমানাও বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশের সব হাজত, জেরা রুমে থাকতে হবে সিসিটিভি, রায় সুপ্রিম কোর্টের

সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে আজ ট্রাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস’ ঘোষণা করেছে, কৃষক সংগঠনগুলির পাশে দাঁড়িয়ে ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা গোটা উত্তর ভারতে অত্যাবশ্যক পণ্য পরিবহণ বন্ধ করে দেবে। সংগঠনের সভাপতি কুলতারণ সিংহ অটওয়াল বলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার না-করলে ৮ ডিসেম্বর থেকে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীরে পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকবে। সড়কপথে প্রায় ৬০ শতাংশ পণ্য পরিবহণ হয়। তা মনে করিয়ে দিয়ে ট্রাক ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি, মোদী সরকার অনড় থাকলে গোটা দেশে ‘চাক্কা জ্যাম’ হবে।

বুধবার সাধারণত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। তবে আজ তা হয়নি। আগামিকালের বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ তাঁর বাড়িতে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কৃষিমন্ত্রী তোমর বলেন, “চাষিদের আপত্তি লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। দেখা যাক, কতখানি সমাধান করা যায়।”

আরও পড়ুন: কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার আগে অমরেন্দ্র-অমিত বৈঠক আজ

এর পরে হরিয়ানা-দিল্লির সিংঘু সীমানায় কৃষক সংগঠনগুলির দু’ঘণ্টা বৈঠক হয়। ঠিক হয়, সরকারের কাছে আইন নিয়ে আপত্তি জানালেও তা নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না। আইন প্রত্যাহারই একমাত্র দাবি হবে। বৈঠকের পরে ক্রান্তিকারী কিসান ইউনিয়নের নেতা দর্শন পাল অভিযোগ তোলেন, মোদী সরকার কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করছে। সরকার মনে করছে, শীতের জন্য চাষিরা বেশি দিন আন্দোলন চালাতে পারবেন না। আর এক কৃষক নেতা গুরনাম সিংহ চাদোনি বলেন, ৫ ডিসেম্বর গোটা দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদী, মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানির মতো শিল্পপতিদের কুশপুতুল পোড়ানো হবে। আগামিকালের বৈঠকে সরকার আইন প্রত্যাহারে রাজি না হলে, আশেপাশের রাজ্য থেকে আরও কৃষক দিল্লির সীমানায় এসে জড়ো হবেন। এ দিনই মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র থেকে চাষিদের একটি দল দিল্লির পথে রওনা দিয়েছেন।

কৃষকদের অবরোধে দিল্লি-হরিয়ানা সংলগ্ন টিকরী, ঝারোড়া, ঝটীকরা সীমানা আগেই বন্ধ ছিল। বদুসরাই সীমানায় শুধু বাইক-স্কুটার চলছে। আজ সকালে উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগর থেকে আসা কৃষকদের ঠেকাতে নয়ডা লিঙ্ক রোডে চিল্লা সীমানাও বন্ধ করে দিতে হয়। পরে অবশ্য তা খুলে দেওয়া হয়। গাজিয়াবাদের দিকে গাজীপুর সীমানাতেও ভিড় বেড়েছে।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় নয়, পুলিশকর্তাদের বৈঠকে বার্তা অমিত শাহের

কৃষি আইনের প্রতিবাদে হরিয়ানার বিজেপির জোট সরকারের থেকে দুই নির্দল বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন। বিজেপির শরিক জেজেপি-র উপর চাপ বাড়ছে। উপমুখ্যমন্ত্রী, জেজেপি নেতা দুষ্যন্ত চৌটালা এখনও মুখ খোলেননি। আজ জেজেপি-র মুখপাত্র প্রতীক সোম বলেন, চাষিদের এমএসপি তুলে দেওয়া হলে দুষ্যন্ত উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে দুষ্যন্ত ইস্তফা দেবেন। আর দুষ্যন্তের বাবা অজয় চৌটালা আজ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী মুখে বলছেন, এমএসপি (ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) বহাল থাকবে। সেটাই আইনে একটা বাক্য লিখে দিতে সমস্যা কোথায়! কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করছে। সরকার মনে করছে, শীতের জন্য চাষিরা বেশি দিন আন্দোলন চালাতে পারবেন না। আর এক কৃষক নেতা গুরনাম সিংহ চাদোনি বলেন, ৫ ডিসেম্বর গোটা দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদী, মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানির মতো শিল্পপতিদের কুশপুতুল পোড়ানো হবে। আগামিকালের বৈঠকে সরকার আইন প্রত্যাহারে রাজি না হলে, আশেপাশের রাজ্য থেকে আরও কৃষক দিল্লির সীমানায় এসে জড়ো হবেন। এ দিনই মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র থেকে চাষিদের একটি দল দিল্লির পথে রওনা দিয়েছেন।

কৃষকদের অবরোধে দিল্লি-হরিয়ানা সংলগ্ন টিকরী, ঝারোড়া, ঝটীকরা সীমানা আগেই বন্ধ ছিল। বদুসরাই সীমানায় শুধু বাইক-স্কুটার চলছে। আজ সকালে উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগর থেকে আসা কৃষকদের ঠেকাতে নয়ডা লিঙ্ক রোডে চিল্লা সীমানাও বন্ধ করে দিতে হয়। পরে অবশ্য তা খুলে দেওয়া হয়। গাজ়িয়াবাদের দিকে গাজীপুর সীমানাতেও ভিড় বেড়েছে।

কৃষি আইনের প্রতিবাদে হরিয়ানার বিজেপির জোট সরকারের থেকে দুই নির্দল বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন। বিজেপির শরিক জেজেপি-র উপর চাপ বাড়ছে। উপমুখ্যমন্ত্রী, জেজেপি নেতা দুষ্যন্ত চৌটালা এখনও মুখ খোলেননি। আজ জেজেপি-র মুখপাত্র প্রতীক সোম জানান, চাষিদের এমএসপি তুলে দেওয়া হলে দুষ্যন্ত উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে দুষ্যন্ত ইস্তফা দেবেন। আর দুষ্যন্তের বাবা অজয় চৌটালা আজ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী মুখে বলছেন, এমএসপি (ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) বহাল থাকবে। সেটাই আইনে একটা বাক্য লিখে দিতে সমস্যা কোথায়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement