কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবে ভোটের আগে কৃষক আন্দোলনে ইতি টানতে ফের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসরে নামলেন। আন্দোলনের পরবর্তী গতিপথ নিয়ে শনিবার সংযুক্ত কিসান মোর্চা বৈঠকে বসবে, তা আগে থেকেই ঠিক ছিল। বৈঠকের আগে, শুক্রবার রাতে শাহ কৃষক নেতাদের ফোন করেন বলে সূত্রের খবর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, কেন্দ্র তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছে। অন্য দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য মোর্চা একটি কমিটি গড়ুক।
শাহের অনুরোধ মেনেই আজ সংযুক্ত কিসান মোর্চা পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। আগামী দু’দিন কেন্দ্র কী করে, তা দেখে মোর্চা ৭ ডিসেম্বর ফের বৈঠকে বসবে। মোর্চা নেতাদের ইঙ্গিত, সরকারের সঙ্গে আলোচনা ঠিক পথে এগোলে দিল্লির সীমানা থেকে ধর্না তুলে চাষিরা গ্রামে ফিরতে পারেন।
এক বছর আগে, গত ডিসেম্বরে তিন কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে মোর্চার প্রতিনিধিদের দর কষাকষির সময়ও শাহ কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু সমাধানসূত্র মেলেনি। এখন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার হলেও চাষিরা আন্দোলন থেকে সরেননি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁরা আরও ছয় দফা দাবি তুলেছেন। ফসলের এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি, বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিল প্রত্যাহার, দিল্লি দূষণ প্রতিরোধ আইন থেকে ফসলের গোড়া পোড়ালে চাষিদের শাস্তির ধারা রদ, আন্দোলনকারী চাষিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, আন্দোলনে মৃত কৃষকদের পরিবারের পুনর্বাসন-ক্ষতিপূরণ এবং লখিমপুর খেরি কাণ্ডে জড়িত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির বরখাস্ত ও গ্রেফতারি।
কিসান মোর্চার বক্তব্য, প্রতিটি দাবিতে কেন্দ্রকে সরকারি ভাবে অবস্থান জানাতে হবে। কেন্দ্রের বিষয়ে কৃষক সংগঠনগুলির তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে অতীতে। সরকার মৌখিক আশ্বাস দিয়ে আন্দোলনে ইতি টানতে চায়। খাতায়-কলমে আশ্বাস না পেলে আন্দোলন চলবে।
মোর্চার পাঁচ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন অশোক ধাওয়ালে, বরবীর সিংহ রাজেওয়াল, গুরনাম সিংহ চাদুনি, শিব কুমার কাক্কাজি ও যুধবীর সিংহ। যুধবীর বলেন, “অমিত শাহ কাল রাতে ফোন করে বলেছেন, কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরে সরকার আন্দোলনের সমাধান চায়। তিনি চান আমরা একটি ছোট, দায়িত্বশীল কমিটি গড়ি, যার সঙ্গে সরকার কথা বলতে পারবে।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, কৃষক আন্দোলনে ইতি টেনে পঞ্জাবে অমরেন্দ্র সিংহ ও প্রাক্তন অকালি দল নেতা সুখদেও সিংহ ধিন্দসার সঙ্গে জোট করে ফেলতে চাইছেন শাহ। তিনি জানিয়েছেন, অমরেন্দ্র, ধিন্দসার সঙ্গে জোট নিয়ে কথা চলছে। তাঁর দাবি, “কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরে পঞ্জাবে চাষিদের বিষয়টি আর ভোটের প্রসঙ্গ হবে না। উন্নয়ন ও অন্যান্য প্রশ্নেই লড়াই হবে নির্বাচনে।” তবে দু’রাজ্যে ভোটের আগে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের প্রসঙ্গ নতুন করে চাপে ফেলতে পারে বিজেপিকে। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত এ দিন টুইটারে লিখেছেন, “আন্দোলন শুরুর সময়েই হুঁশিয়ার করেছিলাম পরের নম্বরটা হবে ব্যাঙ্ক। ফল দেখুন, ৬ ডিসেম্বর সংসদে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিল পেশ হতে চলেছে। এর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে জোরদার আন্দোলন দরকার।”