রাকেশ টিয়ায়েত। ছবি: পিটিআই
শুধু দিল্লিতেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাকেশ টিকায়েত। কৃষকদের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে অন্তত ৪৪ বার জেল খেটেছেন ভারতীয় কৃষক ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর মুখপাত্র রাকেশ। কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে ছেড়েছেন দিল্লি পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি। এ বার দিল্লির লড়াইয়েও সামনের সারিতে সেই রাকেশ। এ বারের আন্দোলনেও রাকেশের নামে দায়ের হয়েছে একাধিক এফআইআর।
প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্র্যাক্টর র্যালিতে রাজধানীর রাজপথে বিপুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল তীব্র অশান্তি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে। তার উপর লালকেল্লায় গিয়ে গম্বুজের মাথায় উঠে পড়া, আন্দোলনের পতাকা টাঙিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনার জেরে অনেকটাই চাপে আন্দোলনকারীরা। এমন পরিস্থিতিতেও হাল ছাড়তে নারাজ বিকেইউ নেতা রাকেশ। তাঁর বক্তব্য, তিনি প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবেন, কিন্তু আন্দোলন থেকে পিছু হঠবেন না।
এই রাকেশ মধ্যপ্রদেশে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ৩৯ দিন জেলে ছিলেন। আখের দাম বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনকে নিয়ে গিয়েছিলেন সংসদ ভবন পর্যন্ত। সেখানে অবস্থান-আন্দোলনের জেরে দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। ছিলেন তিহাড় জেলে। প্রায় একই রকম ভাবে কৃষকদের হয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জন্য ছিলেন জয়পুর জেলেও।
কৃষক স্বার্থে এমন অদম্য জেদ আর ইচ্ছাশক্তি রাকেশ পেয়েছেন উত্তরাধিকার সূত্রে। তাঁর বাবা ছিলেন বিকেইউ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৮৭ সালে উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলায় ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন কৃষকরা। সেই প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ টিকায়েত। ওই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। তার পরেই গঠিত হয় বিকেইউ। প্রেসিডেন্ট হন মহেন্দ্র। এই মহেন্দ্রই রাকেশের বাবা।
উত্তরপ্রদেশের মুজাফ্ফরনগর জেলার সিসাউলি গ্রামে রাকেশের জন্ম ১৯৬৯ সালে। ১৯৮৫ সালে যোগ দেন দিল্লি পুলিশের কনস্টেবলের চাকরিতে। কিন্তু ১৯৯০-র দশকে সেই চাকরি ছেড়ে বাবার সঙ্গে যোগ দেন কৃষক আন্দোলনে। বাবার মৃত্যুর পর বিকেইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র হন রাকেশ। প্রেসিডেন্ট হন নরেশ টিকাইত। তব সংগঠনের যাবতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মূলত রাকেশই শেষ কথা।