ছবি পিটিআই।
রাস্তা জুড়ে থরে থরে সাজানো কংক্রিটের ব্যারিকেড। ৩-৪ স্তরে কাঁটাতারের বেড়া। তার ঠিক পিছনেই আবার কংক্রিটের ব্যরিকেডের মাঝে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। প্রতিটি ব্যারিকেডের ঠিক পরে রাস্তায় পুঁতে রাখা হয়েছে সার সার গজাল আর পেরেক।
তিন-চার স্তরীয় ব্যারিকেডের পিছনে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড় করানো পুলিশের গাড়ি, বাস। আর তার সঙ্গে সতর্কিত পুলিশের টহল। সিঙ্ঘু, টিকরি এবং গাজিপুর—দিল্লির ৩ সীমানাকে এ ভাবেই নিরাপত্তার দুর্গে পরিণত করে ফেলা হয়েছে। দেখে মনে হতে পারে, এ যেন দুই বিবদমান দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত।
গাজিপুর-মেরঠ হাইওয়ে ধরে উত্তরপ্রদেশ থেকে কৃষকরা দিল্লিতে যাতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য সেই হাইওয়ের উপর ৪ স্তরীয় নিরাপত্তার দেওয়াল তোলা হয়েছে। দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় হাইওয়েতে অস্থায়ী ইট, সিমেন্টের দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে।
গাজিপুর সীমানাকে দেখে মনে হবে যেন সেখানে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। কয়েকশো পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স-এর জওয়ানরা সর্বক্ষণ নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন। নজরদারি চালাতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
টিকরি সীমানাতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। বেশ কয়েক স্তরে নিরাপত্তার দেওয়াল তোলা হয়েছে সেখানে। রাস্তার উপর বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পেরেক আর গজাল। যাতে কৃষকরা ট্র্যাক্টর নিয়ে এগোতে গেলে সেখানেই আটকে যান।
২৬ জানুয়ারির ঘটনার পর আর কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না দিল্লি প্রশাসন। সে দিন ব্যারিকেড দেওয়ার পরেও তা ভেঙে ফেলেছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। ঢুকে পড়েছিলেন লালকেল্লায়। শনিবার থেকে দেশ জুড়ে ‘চাক্কা জ্যাম’ এবং আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো। ২৬ জানুয়ারির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তাই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে ওই ৩ সীমানাকে। এই ৩ জায়গাতেই দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।
প্রশাসন যখন নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর, তার ঠিক উল্টো ছবি ধরা পড়ল আন্দোলনকারী কৃষক শিবিরে। তাঁরা কিন্তু নির্বিকার। রাস্তার উপর সারি সারি ভাবে বসে রয়েছেন। সেখানেই খাওয়াদাওয়া সারছেন। রাস্তার উপরই মাদুর, চাটাই বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনের। বৃহৎ আন্দোলনের জন্য কৃষকরা ট্রেনে চেপে দিল্লিতে আসা শুরু করেছে। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, দিল্লিগামী ট্রেনগুলিকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।