অশান্তির আঁচ: লালকেল্লা চত্বরে চিঁড়েচ্যাপ্টা পুলিশের গাড়ি। ছবি: পিটিআই।
আবার হাজির ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’রা। এ বার অবশ্য তাঁরা ‘ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে’র রূপে! ভোটের আবহে তাঁদের চিনতে পেরেই সরগরম সমাজমাধ্যম।
কৃষক আন্দোলন প্রজাতন্ত্র দিবসে পৌঁছে গিয়েছে লালকেল্লায়। তার পর থেকেই ফেসবুকে চোখে পড়ছে কৃষি আইনের সমর্থনে ও আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরোধিতা করে বাংলায় লেখা একটি বয়ান। হুবহু এক বয়ান শেয়ার হয়েছে আলাদা আলাদা নামের প্রোফাইল থেকে। লক্ষণীয়, সবার নাম আলাদা হলেও সবার লেখাটিই শুরু হয়েছে ‘আমিও এক জন ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে’ বাক্যটি দিয়ে। ইংরেজিতেও এই সংক্রান্ত একটি বয়ান অনেকে অবিকল শেয়ার করেছেন টুইটারে। তাতে বলা হচ্ছে, ‘‘আমার ৮০ বছরের ঠাকুমা বললেন, মৃত্যুর আগে এমন লজ্জাজনক ঘটনাও দেখতে হল! আমি শুধু বলেছি মোদীজিকে বিশ্বাস করো।’’
এই প্রসঙ্গেই অনেকে তুলে এনেছেন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার কথা। অমিত শাহের প্রচার মিছিলের পরে ওই ঘটনা ঘটে। বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরাই ওই ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই সমাজমাধ্যমে এ ভাবেই আবির্ভাব ঘটেছিল এমন বহু ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্রে’র। ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র...’ দিয়ে সেই বয়ান থেকে দাবি করা হয়েছিল টিএমসিপি নিজেরাই বাইকে আগুন লাগিয়ে, মূর্তি ভেঙে মিডিয়াকে ডেকে আনে।
‘ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে’ এ বার দাবি করেছেন, যারা ট্র্যাক্টর নিয়ে মিছিল করছেন তাঁরা ক্ষুদ্র চাষি হতে পারেন না। তাই নতুন কৃষি বিলের প্রতি নৈতিকভাবে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ওই ‘ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে।’ পুরনো কৃষি বিলের জেরে দুর্দশায় দিন কাটত বলেও দাবি করা হয়েছে। বাক্য গঠন তো বটেই, বানান ভুল অবধি এক সেই সব পোস্টে!
সমাজমাধ্যমে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সেলই রয়েছে এর পিছনে। তাঁদের দাবি, কৃষক আন্দোলনের প্রভাব পড়তে পারে বাংলার ভোটে। তাই বাংলা ভাষায় এমন বয়ান বানিয়ে তা প্রচারে তৎপর হয়েছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের আহ্বায়ক উজ্জ্বল পারেখের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বহু ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’কে এ বার ‘ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে’-র রূপে দেখে দিনভর রঙ্গ-রসিকতার ফোয়ারাও ছুটেছে ফেসবুকে। অনেকে লিখেছেন, এই বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্ররা লালকেল্লার ভিতরেই থাকেন। তাঁরা নিজের চোখে সব দেখেছিলেন।