হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। ছবি সংগৃহীত।
‘আমরা আমাদের হাত রক্তাক্ত করতে চাই না। রক্তপাত হলে তার জন্য কে দায়ী থাকবে?’ কৃষকদের আন্দোলন যে ভাবে সামলানো হচ্ছে, তাতে যে কোনও রকম অশান্তি তৈরি হতে পারে বলে এই ভাষাতেই সুপ্রিম কোর্ট আজ দুপুরে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। তবে বিকেলের মধ্যে হরিয়ানায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার আন্দোলন প্রশমন করার চেষ্টার বদলে তাতে আরও ঘৃতাহুতি দিল।
রবিবার কৃষক সংগঠনগুলি হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের ডাকা কিসান মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চে ভাঙচুর করেছিল। হরিয়ানা সরকার আজ কৃষক নেতা গুরনাম সিংহ চাদুনি-সহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল। ৮০০ থেকে ৯০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধেও পুলিশ মামলা করেছে। গুরনাম ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের একটি গোষ্ঠীর প্রধান মুখ। তিনি নিয়মিত কৃষক সংগঠনগুলির অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকেও বসছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র করনালে তাঁর অনুষ্ঠানেই কৃষকদের হাঙ্গামার জেরে খট্টরকে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছিল। তার পরেই তিনি গুরনামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। পুলিশ এ দিন গুরনামের বিরুদ্ধে মামলা করায় নতুন করে কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সরকারি কর্মীদের উপর হামলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগ এনেছে।
দিল্লির সীমানায় ৪৬ দিনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রবিবারে করনালের বিক্ষোভে প্রথম অশান্তি হল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যে কোনও রকম অশান্তি তৈরি হতে পারে। যে কেউ, যে কোনও দিন অশান্তি তৈরি করতে পারে। তার জন্য সকলকে দায়ী থাকতে হবেও মন্তব্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। হরিয়ানা পুলিশের পদক্ষেপের পরে রাজ্যের কংগ্রেস নেত্রী কুমারী শৈলজার দাবি, কৃষকদের উপরে নিপীড়নের জন্য খট্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যে ভাবে কৃষক আন্দোলন নিয়ে মোদী সরকারের ভূমিকার নিন্দা করেছে, তার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, মনোহরলাল খট্টর, যোগী আদিত্যনাথের মতো মুখ্যমন্ত্রীদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। যে ৬৫ জন কৃষকের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের পাশাপাশি দেশের ৬২ কোটি কৃষকের কাছেও।’’ আজ কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আরও তিন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন নিউমোনিয়ার কারণে। টিকরি সীমানা থেকে বারনালায় ফিরে নির্মল সিংহ নামে এক কৃষক আত্মঘাতী হন, দাবি কৃষক নেতাদের।
আরও পড়ুন: বালাকোটে কি ৩০০ পাক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল? জেনে নিন আসল তথ্য
আরও পড়ুন: কর্নাটকে গাড়ি দুর্ঘটনায় সঙ্কটজনক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীপাদ নাইক, মৃত স্ত্রী এবং সচিব
কৃষি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিরোধী সাংসদরা কৃষি আইন ও তার প্রভাব নিয়ে আলোচনার চান। কিন্তু কমিটির চেয়ারম্যান, বিজেপি সাংসদ পি সি গাড্ডিগৌদার রাজি না হওয়ায় কংগ্রেসের প্রতাপ সিংহ বাজওয়া, ছায়া বর্মা, প্রাক্তন অকালি নেতা ও সাংসদ সুখদেব সিংহ ধিন্দসা ওয়াক-আউট করেন। কৃষি আইনের বিরোধিতার প্রশ্নে এনসিপিনেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক বসেন দুই বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও ডি রাজা।