—ফাইল চিত্র।
কৃষক আন্দোলন ঘিরে জনজীবনে অশান্তি ছড়ানো তথা তার অপব্যবহারের ‘আশঙ্কায়’ টুইটারকে আরও ১,১৭৮টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিল ভারত সরকার। সরকারের দাবি, ওই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের মদতে খলিস্তান সমর্থনকারীদের সম্পর্ক রয়েছে। কৃষক আন্দোলন ঘিরে ভুয়ো খবর ছড়াতেই সেগুলি কাজ করছে বলেও দাবি সরকারের। তবে এখনও এই নির্দেশের জবাব দেননি টুইটার কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার টুইটারকে এ সংক্রান্ত এক নোটিস পাঠিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তথা গোয়েন্দা সংস্থাগুলির পরামর্শেই ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তার দাবি, ‘‘মূলত খলিস্তানিদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল এমন লোকজনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টুইটারকে। তা ছাড়া যে সব অ্যাকাউন্ট পাক মদতে চলছে, তেমন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এই ধরনের অ্যাকাউন্টে ‘অটোমেটেড বট’ রয়েছে বলে দাবি সরকারের। মূলত কৃষক আন্দোলন ঘিরে ভুয়ো খবর বাড়িয়ে পরিবেশন করা বা উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে।’’
সরকার পক্ষের দাবি, এই সব অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পরিবেশিত টুইটগুলির মাধ্যমে জনজীবনে অথবা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়াতে পারে। পাশাপাশি, সরকারি নির্দেশ অমান্য করা হলে টুইটার-কর্তাদের ৭ বছরের কারাবাস হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ‘মোদী প্ল্যানিং-ফারমারজেনোসাইড’ এই হ্যাশটাগে কৃষক আন্দোলনের নানা দিক তুলে ধরে প্রচার শুরু করেছে টুইটারের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে। চলতি মাসের গোড়াতেই এ ধরনের ২৫৭টি টুইটার হ্যান্ডল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে প্রথম দিকে তা বন্ধ করলেও নেটাগরিকদের সমালোচনার পর বেশির ভাগ অ্যাকাউন্ট ফের চালু রাখতে দেয় টুইটার। টুইটারের দাবি ছিল, বাক্স্বাধীনতা রক্ষার্থে এবং তাতে খবর হওয়ার যোগ্য কনটেন্ট থাকায় সেগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। যদিও এতে সহমত ছিল না তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। সরকারের দাবি, টুইটার উস্কানিমূলক বক্তব্য, ছবি তৈরি বা পরিবেশিত না করলেও বেশ কিছু আপত্তিজনক বক্তব্যের দায়ভার এড়াতে পারে না। ওই মতবিরোধের মধ্যেই ফের নতুন করে সরকারি ‘নজরে’ পড়ল টুইটার!
রবিবার টুইটারের ভারতীয় শাখার নীতি নির্ধারক অধিকর্তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মহিমা কল। কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে টুইটারের সম্পর্ক যখন ক্রমশই অবনতির পথে, তখনই সামনে আসে এই খবর। ভারতে টুইটারের নীতি নির্ধারণের বিষয়টি দেখাশোনা করছিলেন মহিমা। গত ছ’বছর ধরে তিনি এই দায়িত্বে। তবে এ বছর জানুয়ারি মাসে হঠাৎই সেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। জানান, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই কাজ থেকে কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম চান। শনিবার তাঁর পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করল টুইটার। টুইটারের এক পদস্থ কর্তাও জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই কাজ থেকে নিষ্কৃতি চেয়েছেন মহিমা। যদিও পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারত সরকারের সঙ্গে টুইটারের মনোমালিন্যের মধ্যেই ভারতীয় অধিকর্তার পদত্যাগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর পরই ফের সামনে এল কিছু টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার সরকারি নির্দেশের খবর।