ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে এগিয়ে আসছে বিধানসভা ভোট। বিরোধী শিবির দীর্ঘদিন বাদে আপাতত এককাট্টা কৃষক আন্দোলনের মঞ্চে। আজ ধর্নায় বসে আটকও হয়েছেন এস পি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব তথা ‘বাবুয়া’। অনন্যোপায় হয়ে ‘বুয়া’ মায়াবতীকেও তাই টুইট করতে হল কৃষক-সমর্থনে। অন্তত উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা তেমনই।
২০১৯-র লোকসভা ভোটের পর থেকে আজ পর্যন্ত বিএসপি নেত্রী মায়াবতী পরোক্ষ ভাবে মোদী সরকারকে সংসদের ভিতরে ও বাইরে সমর্থন করে গিয়েছেন বলেই বার বার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী নেতারা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার রক্তচক্ষু তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর। পুরনো মামলা থেকে নতুন বিপদের আশঙ্কায় দলিত নেত্রী মনুবাদী পার্টির বিরুদ্ধাচরণ করছেন না বলেই রাজনৈতিক শিবিরের মতামত। গতকাল প্রায় ১৫টি দল কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বনধকে লিখিতভাবে সমর্থন করলেও শামিল হননি মায়াবতী। সংসদেও কৃষি বিলগুলি পাশ করানোর সময় নীরবতা বজায় রেখেছিল বিএসপি।
কিন্তু মায়াবতীকে আজ টুইট করে বন্ধ সমর্থন করতে দেখা গেল। তবে তা অখিলেশ মাঠে নামার পর। মায়াবতীর টুইট, “কৃষকেরা তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি, আইনগুলি প্রত্যাহার করে নিক কেন্দ্র। ৮ তারিখে কৃষক সংগঠনগুলি ভারত বন্ধে র ডাক দিয়েছে। বিএসপি একে সমর্থন করে। দলের তরফে কেন্দ্রকে আবেদন, কৃষকদের দাবি মেনে নেওয়া হোক।’’
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে টিকা-পর্যটনের বিজ্ঞাপন? সতর্ক করে দিলেন মন্ত্রীও
আরও পড়ুন: ‘এই দ্বিচারিতা লজ্জার’, কৃষকদের বন্ধ সমর্থন করায় বিরোধীদের তোপ কেন্দ্রের
আগেই উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ‘কিসান যাত্রা’-র ডাক দিয়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু কনৌজে ঘোষিত অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি তিনি। আজ বাড়ির সামনেই তাঁকে আটকে দেয় উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। প্রতিবাদ জানাতে অখিলেশ বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে আটক করে এলাকা খালি করে রাজ্য পুলিশ। ধর্নাস্থলে বসে অখিলেশের বক্তব্য, “যদি এই কৃষি আইন কৃষকস্বার্থেই হবে, তা হলে আজ তাঁরা যুদ্ধের পথ ধরবেন কেন? সরকার এত একগুঁয়ে কেন? কৃষকরাই যদি এই আইন না চান, তা হলে সরকারের উচিত সেগুলি প্রত্যাহার করা।’’
অখিলেশ ঘোষণা করেছিলেন, ৭ তারিখ থেকে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে হবে ‘কিসান যাত্রা’। তাই আগে থাকতেই ‘অতিসক্রিয়’ ছিল পুলিশও। আজ ঘোষিত কর্মসূচিতে যাওয়ার আগেই বিক্রমাদিত্য মার্গে অখিলেশের বাড়ি ঘিরে ধরেছিল পুলিশ। এ দিন কনৌজে যাওয়ার কথা ছিল অখিলেশের। সেই কর্মসূচি আটকাতেই যোগীর পুলিশের এই ব্যবস্থা বলে অভিযোগ সমাজবাদী পার্টির। সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরি বলেছেন, ‘‘অখিলেশ যাদব রাস্তায় নামায় সরকার ভয় পেয়েছে। প্রথমে সরকার এই অমানবিক কৃষি আইন পাশ করিয়েছে, আর এখন প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। এটা গণতন্ত্র বিরোধী।’’ দলের তরফে বলা হয়েছে, অখিলেশ যাদবকে আটকেও কোনও লাভ হবে না। গোটা রাজ্য জুড়ে কৃষকরা প্রতিবাদে শামিল হবেন।