জাঠ কৃষক নেতা মহেন্দ্র সিংহ টিকায়েত। ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের জাঠ কৃষক নেতা মহেন্দ্র সিংহ টিকায়েতের পরিবারের সঙ্গে পৃথক ভাবে দৌত্য চালাচ্ছে কেন্দ্র। ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের বড় এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠী টিকায়েতদের তুষ্ট করতে চাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাই সামগ্রিক ভাবে কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে চার দফায় আলোচনার পাশাপাশি কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর এবং খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল কয়েক দফায় কথা বলেছেন প্রয়াত মহেন্দ্রের পুত্র নরেশের সঙ্গে।
উত্তরপ্রদেশের কৃষক সংগঠনের অন্যান্য গোষ্ঠীর ধারণা, আন্দোলন দুর্বল করতে এবং বিভাজন ঘটাতে টিকায়েতদের আলাদা করে তোষণ করার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। যদিও এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি।
উত্তরপ্রদেশের জাঠ কৃষক বলয়ে টিকায়েত পরিবারের জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব সম্পর্কে নয়াদিল্লি অজ্ঞ নয়। ১৯৮৮ সালের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাজীব গাঁধীর শেষ পর্বে দিল্লির বোট ক্লাব দখল করে ৫ লক্ষ কৃষককে ধর্নায় বসিয়ে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র। এক সপ্তাহ পরে রাজীব মানতে বাধ্য হয়েছিলেন কৃষকদের তৎকালীন ৩৫ দফা দাবি। ঠিক দু’বছর আগে নরেশের নেতৃত্বে ত্রিশ হাজার কৃষক এসে দিল্লি সীমানায় ধর্না দিয়ে নাজেহাল করেছিল মোদী সরকারকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অবশ্য বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে এখন যে গেরুয়া পতাকা উড়ছে, তার পিছনে মুজফ্ফরনগরের জাঠ নেতা নরেশের বিশেষ ভূমিকাকে ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, সমস্ত জাতপাতের মানুষকে হিন্দুত্বের মঞ্চে এনে মেরুকরণের যে রাজনীতি করেছিল বিজেপি, তাতে টিকায়েতের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বাইশের ভোটেও এই কৃষকশক্তিকে পাশে প্রয়োজন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের।
বর্তমান আন্দোলন নিয়ে টিকায়েত নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। মহেন্দ্রের আর এক পুত্র তথা কৃষক ইউনিয়নের টিকায়েত গোষ্ঠীর মুখপাত্র রাকেশ বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নতুন তিনটি কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষি ঋণের আইনকানুন সহজ করার কথা বলেছি আমরা। সস্তায় বিদ্যুৎ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।’’