সাধারণতন্ত্র দিবসে ট্র্যাক্টর মিছিল কৃষকদের। ছবি: পিটিআই।
সকাল থেকেই দেশের নানা প্রান্তে চলছে সাধারণতন্ত্র দিবস পালন। সেই আবহেই প্রতি বছরের মতো এ বারও ফসলের ন্যুনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) সংক্রান্ত দাবি দাওয়া নিয়ে ট্র্যাক্টর মিছিল করলেন হরিয়ানার কৃষকেরা। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংযুক্ত কিসান মোর্চা (এসকেএম)-র ডাকে হরিয়ানার কার্নালে ট্র্যাক্টর মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন শয়ে শয়ে কৃষক।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি দেশজোড়া ট্র্যাক্টর মিছিলের ডাক দিয়েছিল এসকেএম। সেই ডাকেই রাস্তায় নেমেছেন কৃষকেরা। অমৃতসর থেকে কৃষক নেতা সরওয়ান সিংহ পন্ধের বলেন, ‘‘৭৫ বছর আগে এই দিনে ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রের বর্তমান সরকার কৃষক-শ্রমিকদের কণ্ঠস্বরকে সম্মান করে না। তাদের দাবিও মানে না।’’ পন্ধের জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে। পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ-সহ সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ট্র্যাক্টর মিছিল বার করা হবে।
এর আগেও সাধারণতন্ত্র দিবসে ট্র্যাক্টর মিছিল করেছেন কৃষকেরা। ২০২১ সালে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রাজধানী দিল্লিতে বিশাল ট্র্যাক্টর মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন দেশের নানা প্রান্তের কৃষকেরা। সেই মিছিল নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়। বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়েন লাল কেল্লা চত্বরে। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু ও টিকরি সীমানায়।
ফসলের এমএসপি, কৃষিঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বৃদ্ধি করার মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসেছেন কৃষকেরা। নভেম্বরের শেষ থেকেই কৃষকেরা শম্ভু সীমানা থেকে দফায় দফায় দিল্লির উদ্দেশে মিছিল করে এগোনোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে পুলিশ-প্রশাসনের বাধায় বার বারই কৃষকদের সেই ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর পর দাবি আদায়ে খানাউড়ি সীমান্তে গত ২৬ নভেম্বর ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেন কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল। ক্রমে তাঁর শারীরিক অবস্থাও সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে। সেই আবহেই কৃষকদের প্রতি সুর নরম করে কেন্দ্র। শেষমেশ ৫৫ দিন অনশনের পর গত ১৯ জানুয়ারি কেন্দ্রের তরফে মৌখিক আশ্বাস পেয়ে অনশন ভাঙেন ডাল্লেওয়াল। সঙ্গে অনশন ভেঙেছেন আরও ১২১ জন কৃষক। তবে অনশন উঠলেও আন্দোলন থামেনি। কৃষকেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-র আইনি স্বীকৃতি না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।