—ফাইল চিত্র।
বিতর্কিত কৃষি সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলন আছড়ে পড়েছে রাজধানীর বুকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আলোচনার আশ্বাস দিলেও, বিক্ষোভ সরেনি একচুলও। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে এ বার এগিয়ে আসতে হল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকেও। তিনি জানালেন, কৃষকদের কল্যাণের কথা ভেবে, যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করেই কৃষি আইনে সংশোধন ঘটিয়েছে তাঁর সরকার।
রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কৃষকদের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর সম্প্রতি সংসদে কৃষি সংশোধনী আইন পাশ হয়েছে। এই সংশোধনের ফলে কৃষকরা শুধু শিকলমুক্তই হননি, নতুন অধিকার ও নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা এসে পৌঁছেছে তাঁদের হাতে।’’
কৃষি আইন সংশোধনের ফলে কৃষকদের সামনে অনেক দরজা খুলে গিয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি আইনে সংশোধন ঘটানোয় আমাদের কৃষকরা আরও অনেক বেশি সুযোগ পাবেন। এই আইন আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই আইনের আওতায় এক মাসের মধ্যে কৃষকদের সমস্ত অভাব অভিযোগের সমাধান হয়ে যাবে। মহকুমা শাসকদের নির্দেশ দেওয়া রয়েছে, এক মাসের মধ্যে কৃষকদের সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: বঙ্গভোটের ‘মন কি বাত’! মোদীর মুখে অরবিন্দ থেকে মনোমোহন বসু
আরও পড়ুন: অমিতের প্রস্তাব মানা হবে কি না, তা নিয়ে আজ বৈঠকে কৃষকরা
এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের ধুলের বাসিন্দা জিতেন্দ্র ভাইজি নামের এক কৃষকের উদাহরণ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকায় ভুট্টার বিক্রি পাকা হয়েছিল এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। সেই বাবদ অগ্রিম ২৫ হাজার টাকাও হাতে পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকি টাকা আটকে যায়। চার মাস অপেক্ষার পর নয়া কৃষি আইন ব্যবহার করে রক্ষা পান উনি। আইন সম্পর্কে বিশদ জ্ঞানই শেষমেশ কাজে আসে তাঁর।’’
তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বার্তা এলেও, দিল্লিতে কৃষকদের বিক্ষোভ স্তিমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ এখনও পর্যন্ত নেই। জাতীয় সড়ক থেকে বিক্ষোভ বুরারি গ্রাউন্ডে সরিয়ে নিয়ে গেলে সরকার তাঁদের অভিযোগ শুনবে এবং দাবিদাওয়াগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে বলে শনিবার বার্তা দেন অমিত শাহ। কিন্তু তাঁর ‘শর্তসাপেক্ষ’ আলোচনায় বসার এই প্রস্তাব রবিবার খারিজ করে দিয়েছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। আন্দোলন সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোও পরিকল্পনা তাঁদের নেই, তা-ও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের পঞ্জাব শাখার সভাপতি জগজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘কোনওরকম শর্ত ছাড়া খোলা মনে আলোচনার প্রস্তাব দিতে পারতেন অমিত শাহ। এই সরকার কৃষকদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতেই চায় না। দেশের সামনে বড়াই করাই একমাত্র কাজ ওদের।’’